‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে ট্যাব কেনার জন্য একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে এ বার পুজোর আগে ১০ হাজার টাকা করে দিয়েছে শিক্ষা দফতর। কেষ্টপুর দেশপ্রিয় বালিকা বিদ্যামন্দিরের ৪৮ জন ছাত্রীর অ্যাকাউন্ট থেকে এই টাকা গায়েব হওয়ার অভিযোগ উঠল। অভিযোগ, সাইবার প্রতারকেরা এই টাকা গায়েব করেছে। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা নাজরিন নাহার জানান, ওই পড়ুয়াদের টাকা সাইবার জালিয়াতেরা নিয়েছে বলে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম বিভাগে মেল করে অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগ, ৪৮ জন ছাত্রীর ১০ হাজার টাকা করে, অর্থাৎ চার লক্ষ ৪৮ হাজার টাকা লোপাট হয়েছে। যে অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে, সেই অ্যাকাউন্ট বিহারের কিসানগঞ্জের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের।
নাজরিন জানান, ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পের টাকা পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে দেওয়ার জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষকে ‘বাংলার শিক্ষা’ পোর্টালে পড়ুয়াদের নাম, অ্যাকাউন্ট নম্বর, আইএফএসসি কোড আপলোড করতে হয়। তাঁরা সেই ভাবেই ‘বাংলার শিক্ষা’ পোর্টালে আপলোড করে তার প্রিন্ট আউট নিয়েছেন। তার পরে ছাত্রীদের দেওয়া তথ্য সব ঠিক মতো আপলোড হয়েছে কি না দেখে, দ্বিতীয় বার আপলোড করে তার প্রিন্ট আউট নিয়েছেন।
নাজরিনের অভিযোগ, প্রকল্পের টাকা ছাত্রীদের অ্যাকাউন্টে ঢুকতে শুরু করলে ৪৮ জন ছাত্রী জানায়, তাদের টাকা ঢোকেনি। তিনি বলেন, “আমরা তখন দ্বিতীয় বার আপলোড করা প্রিন্ট আউট দেখতে গিয়ে দেখি, ওই ৪৮ জন ছাত্রীর আইএফএসসি কোড একই থাকলেও অ্যাকাউন্ট নম্বর পাল্টে গিয়েছে। ওই পাল্টে যাওয়া অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে। যে অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে, সেটি বিহারের কিসানগঞ্জের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বলে জানতে পেরেছি।”
আগেও ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পের টাকা সাইবার প্রতারকেরা লোপাট করেছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। প্রশ্ন উঠেছে, বারবার কেন ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে এই ঘটনা ঘটছে? তদন্তকারী অফিসারদের মতে, শিক্ষকেরা যখন পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্ট নম্বর বাংলা শিক্ষা পোর্টালে ঢুকে দ্বিতীয় বার আপলোড করছিলেন, তখনই হ্যাকাররা পোর্টালে ঢুকে অ্যাকাউন্ট নম্বর পাল্টে দিয়ে থাকতে পারে।
শিক্ষা দফতরের এক কর্তার কথায়, “অ্যাকাউন্ট নম্বর আপলোডের সময়ে বার বার শিক্ষকদের সচেতন করেছি যে, আপলোড করার পরে কী-আপলোড করলেন তা বারবার পরীক্ষা করে দেখে নেবেন। কাজ শেষ হলে লগ আউট করবেন। বার বার নতুন পাসওয়ার্ড তৈরি করবেন। অনেক শিক্ষকের মধ্যেই সেই সচেতনতা নেই।”