অর্ণব দাস, বারাকপুর: নৈহাটির বড়মার সঙ্গে সাক্ষাৎ তারাপীঠের মা তারার! এমনই বিরল ও চমকপ্রদ ঘটনা ঘটালেন নৈহাটির বড় কালীপুজোর (Kali Puja 2024) কর্মসমিতির সদস্যরা। বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টে ৫ নাগাদ অমাবস্যা তিথি শুরুর পরই এই সাক্ষাৎপর্ব হয় ভিডিও কল মারফৎ। নৈহাটির বড়মার পুজোর ১০১তম বর্ষে এমনই বিরল শুভমুহূর্ত সাক্ষী রইল। বড়কালী পূজার সমিতির সম্পাদক তাপস ভট্টাচার্য বলেন, “মা তারাকেও আমরা ‘বড়মা’ বলি। আমাদের মাকেও আমরা ‘বড়মা’ বলি। তাই অমাবস্যা তিথির শুরুতেই দুই ‘বড়মা’র সাক্ষাৎ করানো হয়েছে। গত পুজোতেও ভিডিও কলের মাধ্যমে দুই বড়মা-র সাক্ষাৎ হয়েছিল। অনলাইনের সব পুজোই আমরা মায়ের কাছে পৌঁছে দেওয়ার অঙ্গীকারবদ্ধ। সেটাই করা হয়েছে।”
বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় পরম্পরা মেনে নৈহাটিতে সবার আগে শুরু হয় বড়মার পুজো। তখন তিল ধরার জায়গা নেই নৈহাটি স্টেশন রোড সহ অরবিন্দ রোডে। আর রাত ১টায় অঞ্জলি দেওয়ার সময় গোটা অরবিন্দ রোড কার্যত ভক্তদের দখলেই চলে যায়। যদিও ভিড় শুরু হয়েছিল পুজোর আগের দিন বুধবার দুপুরে, বড়মাকে গয়না পড়ানোর সময় থেকেই। এই অনুমান করে আগে থেকেই পর্যাপ্ত পুলিশ, স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন ছিল। তবে,অনুমানের বাইরে ছিল দণ্ডি কাটার জন্য ভক্তসংখ্যা ও অনলাইনে পুজোর আবেদন। গতবছর পুজোর আগের দিন রাত দুটো-আড়াইটে থেকে শুরু হয়েছিল দণ্ডি কাটা। কিন্তু এবছর বুধবার রাত সাড়ে দশটা থেকেই দণ্ডি কাটতে শুরু করেন ভক্তরা। সেটা দেখেই তড়িঘড়ি ‘গ্রিন কার্পেট’ পেতে দেন উদ্যোক্তারা। আর রাত বারোটার পর কাতারে কাতারে ভক্ত গঙ্গার ঘাটে ভিড় করেন স্নান করে দণ্ডি কাটবেন বলে।
বারাসতের হৃদয়পুর থেকে রাত ১২টায় দণ্ডি কাটতে আসা জগৎজ্যোতি ঘোষ জানিয়েছেন, “বড়মা আমার ডাকে সাড়া দেওয়ায় দণ্ডি কাটতে এলাম।” যশোর রোডের বিটি কলেজ থেকে দণ্ডি কাটতে এসেছিলেন গৃহবধূ পায়েল দাস। তিনি জানিয়েছেন, “ঠিক করেছিলাম, ফাঁকায় ফাঁকায় রাত দুটোয় দণ্ডি কাটব। কিন্তু এসে দেখি, আমার মত মনস্কামনা পূরণ হওয়া হাজারে হাজারে ভক্ত দণ্ডি কাটতে এত রাতেও এসেছেন।” তার পর থেকে সময় যত গড়িয়েছে ভক্তদের ভিড় তত বেড়েছে। রাজ্যে তথা দেশের বাইরে থাকা ভক্তদের পুজোর সুবিধার্থে ‘জয় বড় মা’ অ্যাপ চালু করেছে বড় কালী পুজো সমিতি। অনলাইনে পুজো দেওয়ার শেষ সময় ছিল সন্ধ্যা ছটা। পুজো কমিটির তরফে জানা গিয়েছে, সেখানে পুজোর অনুরোধও প্রায় এক লক্ষ।