সংবাদদাতা, কাটোয়া: কেউ ইটের পাকাবাড়ি করেছেন। তবুও আবাস যোজনার তাঁর নাম এসেছে। কেউ কেউ আবার দু’বার ঘরের টাকা পেয়েছেন। তাঁরও নাকি নতুন করে তালিকায় নাম এসেছে। এমনই অভিযোগের জেরে পূর্বস্থলী-২ ব্লকের চুপির চরে আবাস যোজনার তালিকা যাচাই করতে গিয়ে বাসিন্দাদের ক্ষোভের মুখে পড়লেন বিডিও। গাড়ি থেকে বিডিও নামেননি। তাই শুক্রবার বিকেলে তাঁর গাড়ি আটকে একঘণ্টা বিক্ষোভ দেখান মহিলারা। পরে পূর্বস্থলী থানার পুলিস এসে বিডিওকে উদ্ধার করে।
বাসিন্দাদের দাবি, এলাকায় যাদের মাটির ভাঙা ঘর রয়েছে। তাঁরা বারবার পঞ্চায়েতে আবেদন করেও ঘর পাননি। কিন্তু যাঁদের ইটের বাড়ি রয়েছে তাঁদের দু’বার করে আবাস যোজনার তালিকায় নাম এসেছে। বিডিও শুধু সেসব বাড়িগুলিতেই তদন্ত করতে এসেছেন। তাও আবার তিনি গাড়ি থেকে নামেননি। এই ক্ষোভেই এলাকার মহিলারা বিডিওর গাড়ি ঘিরে ধরে তুমুল বিক্ষোভ শুরু করেন।
এনিয়ে পূর্বস্থলী-২ ব্লকের বিডিও পৌষালী চক্রবর্তীকে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। মেসেজ করলেও তিনি উত্তর দেননি। কালনা মহকুমার এসডিওকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। মেসেজকরলেও তিনি উত্তর দেননি। পূর্বস্থলী উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় বলেন, বিডিওকে ঘিরে কয়েকজন বিক্ষোভ দেখিয়েছে শুনেছি। দেখানে দু’জন ছিল যাঁরা এর আগেও ঘরের টাকা পেয়েছেন। তবুও ঘর করেনি। পাশাপাশি পুরো বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে দেখছি। চুপির বাসিন্দা আসমা বিবি বলেন, আমরা মাটির টিনের ছাউনি দেওয়া ঘরে ছেলে পুলে নিয়ে থাকি। বর্ষায় সাপ ঢুকছে ঘরে। বারবার আবেদন করা সত্ত্বেও আবাস যোজনার তালিকায় নাম আসেনি। তাই আমরা বিডিও ম্যাডামকে গাড়ি থেকে নেমে বাড়ি দেখতে বলেছি। কিন্তু উনি গাড়ি থেকে নামেননি। আরেক বাসিন্দা ফজিলি বিবি বলেন, বিডিও ম্যাডামকে অনুরোধ করেছিলাম আমাদের বাড়িগুলি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিন। কিন্তু উনি আমাদের কথা শোনেন নি। গাড়ির জানালা থেকে মুখ বের করে বলেন, যাঁদের নাম নেই তাঁদের তালিকা দিতে। আমরা কতদিন ধরে তালিকা দেব। তাই আমরা বলেছি আগে আমাদের বাড়ি দিন তারপরে যেতে দেব।
পূর্বস্থলী পঞ্চায়েতের উপপ্রধান কাজল শেখ বলেন, এটা অনেক আগের তালিকা বিডিও তদন্ত করতে এসেছিলেন। সেখানে অনেকেই আছে যাঁরা পাকাবাড়ি করে ফেলেছেন। তাঁদের নাম এমনিতেই বাদ যাবে। কিন্তু বাসিন্দারা তা শোনেননি। আমরা চেষ্টা করব মাটির বাড়িতে থাকেন তাঁরা পাকা ছাদ যাতে পান।
অন্যদিকে কাটোয়া, মঙ্গলকোটের ক্ষীরগ্রামেও একই অভিযোগ বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, প্রধান বাড়ির আবেদন জমা নেওয়ার সময় পক্ষপাতিত্ব করেছেন। কাটোয়া-২ ব্লকের পলসোনাতেও ক্ষোভে ফুঁসছেন বাসিন্দারা।
পলসোনা পঞ্চায়েতের কুয়ারা গ্রামে ৩টি বুথ মিলে ৩৫০০ ভোটার রয়েছে। প্রায় এক হাজার পরিবার রয়েছে। গ্রামে আবাস যোজনার তালিকায় নাম এসেছে ৩০৬ জনের। অভিযোগ, এই তালিকায় ৭০ শতাংশ অযোগ্যদের নাম রয়েছে। তালিকা থেকে বাদ পড়েছে বহু আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা মাটির বাড়িতে বসবাসকারী পরিবার।-নিজস্ব চিত্র