• পুরুলিয়া জেলার জন্মদিন ও বঙ্গভুক্তি দিবস পালন
    বর্তমান | ০২ নভেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, রঘুনাথপুর: শুক্রবার পুরুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় সাড়ম্বরে জেলার জন্মদিন ও ৬৯তম বঙ্গভুক্তি দিবস উদযাপিত হয়েছে। এদিন তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর, পুরুলিয়া পুরসভা, রঘুনাথপুর কলেজ সহ বিভিন্ন সংগঠনের তরফে দিনটি উদযাপন করা হয়। মানভূমের ভাষা আন্দোলনকেও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয়।

    স্বাধীনতার আগে ১৮৩৩ সালে ব্রিটিশ সরকার মানবাজারকে জেলা সদর করে মানভূম জেলা গঠন করেছিল। জেলাটি আয়তনে বেশ বড় ছিল। বর্ধমান, বাঁকুড়ার কিছু অংশ মানভূমের অধীনে ছিল। তৎকালীন বিহারের ধানবাদ, ধলভূম ও সরাইকেল্লা জেলাও এর আওতায় ছিল। পরে ১৮৩৮ সালে মানভূম জেলার সদর পুরুলিয়ায় স্থানান্তরিত হয়। স্বাধীনতার পর মানভূম জেলা বিহারের অন্তর্ভুক্ত ছিল। কিন্তু মানভূমের বাংলাভাষী মানুষ বিহারে থাকতে চাননি। তাঁরা পশ্চিমবঙ্গে অন্তর্ভুক্তির দাবিতে আন্দোলনে নামেন। এভাবেই ভারতের প্রথম ও দীর্ঘতম ভাষা আন্দোলন শুরু হয়েছিল। মানভূমের কংগ্রেস নেতারাও দলত্যাগ করে লোকসেবক সঙ্ঘ নামে একটি পৃথক দল তৈরি করেন।

    ১৯৫৬ সালের ২০ এপ্রিল শুক্রবার সকাল ৭টায় ১০০৫জন আন্দোলনকারী পাকবিড়রা থেকে কলকাতার উদ্দেশে পদযাত্রা শুরু করেন। ১৭দিনের পদযাত্রা শেষে ৬মে রবিবার হাওড়া সেতু পেরিয়ে ওই পদযাত্রা কলকাতায় ঢোকে। তার পরদিন ১৪৪ ধারা অমান্য করে আন্দোলনকারীরা সবাই কারাবরণ করেন। অবশেষে সেবছর ১ নভেম্বর বিহারের মানভূম জেলা ভেঙে বর্তমান পুরুলিয়া জেলার এলাকা পশ্চিমবঙ্গের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সেই সুবাদে ১ নভেম্বর পুরুলিয়ার জন্মদিন।

    শুক্রবার পুরুলিয়া শহরে লোকসেবক সঙ্ঘের উদ্যোগে দিনটি উদযাপিত হয়। সংগঠনের সচিব সুশীল মাহাত বলেন, মানভূম ভাঙার সময় বাংলাভাষী বেশ কিছু এলাকা বিহারে থেকে যায়। সেটা দুঃখের। তবু পুরুলিয়ার বঙ্গভুক্তি মাতৃভাষার অধিকার রক্ষার আন্দোলনে বিশেষ স্থান করে নিয়েছে।

    এদিন রঘুনাথপুর কলেজে অ্যালুমনি অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে এবং রঘুনাথপুর মহকুমার তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সহায়তায় একটি বিশেষ সভা হয়েছে। পুরুলিয়া পুরসভার তরফে তেলকলপাড়া শিল্পাশ্রমে একটি অনুষ্ঠান হয়। সেখানে পুরসভার চেয়ারম্যান নব্যেন্দু মাহালি সহ বঙ্গভূমি আন্দোলনের সেনানীরা উপস্থিত ছিলেন। নব্যেন্দুবাবু বলেন, বঙ্গভঙ্গের সময় থেকে মাত্র ৪৪বছর মানভূম বিহারে ছিল। এই মানভূমের এখন অস্তিত্ব নেই। কিন্তু পুরুলিয়ার মানুষ আজও নিজেদের মানভূঁইয়া বলতে গর্ববোধ করেন।
  • Link to this news (বর্তমান)