হলদিয়ার দুর্গাচকে ‘অঙ্কুশে’র কালী পুজোয় একান্নবর্তী পরিবারের ছোঁয়া
বর্তমান | ০২ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, হলদিয়া: হলদিয়ার দুর্গাচকে এসএফ ব্লক আবাসন এলাকায় মহিলা পরিচালিত সংস্থা ‘অঙ্কুশ’ এর কালীপুজো ও দীপাবলি উৎসবে পাওয়া যায় একান্নবর্তী পরিবারের ছোঁয়া। অঙ্কুশের সদস্যরা কেউ আবাসন এলাকার বাসিন্দা, কারও ঠিকানা শহর ছাড়িয়ে গ্রামে। প্রায় পঁচিশ বছর আগে তাঁদের একসূত্রে গেঁথে অঙ্কুশ ক্লাবের জন্ম দিয়েছিলেন ঊষা পন্ডা। হলদিয়া টাউন স্কুলে শিক্ষিকা ছিলেন ঊষাদেবী। তাঁর হাত ধরেই অঙ্কুশের দীপাবলি উৎসবের সূচনা হয়েছিল ২০০১ সালে। চাঁদা তুলে নয়, সারা বছর ধরে লক্ষ্মীর ভাঁড়ে জমানো অর্থেই সেদিন পুজো শুরু করেছিলেন ঊষাদেবী ও তাঁর সঙ্গীরা। ১৩ বছর আগে ঊষাদেবীর মৃত্যুর পর সেই ধারা বয়ে নিয়ে চলেছেন মহিলারা।
হলদিয়া শহরে প্রথম মহিলা পরিচালিত পুজো করে অঙ্কুশ নারীশক্তি ও সংহতির বার্তা দিয়েছিল। সেই ধারা আজও অক্ষুণ্ণ কল্পনা মাইতি, সঙ্গীতা পন্ড, রানি সাধু, বন্দনা বটব্যাল, পম্পা গুড়িয়াদের হাত ধরে। তাঁরা সবাই নানা সূত্রে অঙ্কুশের যাত্রাপথে যুক্ত রয়েছেন। অঙ্কুশ ক্লাব হয়ে উঠেছে একটি একান্নবর্তী পরিবার। কালীপুজো ও দীপাবলি উৎসবে মহিলা পরিচালিত অঙ্কুশ ক্লাব যৌথভাবে বাঁচার জরুরি সামাজিক বার্তা পৌঁছে দেয় সবাইকে। তিনদিন ধরে পুজো ও উৎসবের আয়োজন করে অঙ্কুশ। এবার তাদের পুজোর বাজেট প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা। অঙ্কুশের থিমের কালী প্রতিমা সবার নজর কেড়েছে। প্রতিমা গড়েছেন মহিষাদলের ইছাপুরের শিল্পী সুভাষ জানা ও কালীপদ জানা। হলদিয়ার দুর্গাচকে পুরসভার ইকো পার্কের পাশে আবাসন এলাকায় তাদের পুজো দেখতে আসছে বহু মানুষ। রঙিন আলোয় সেজে উঠেছে ইকো পার্ক। বাড়তি পাওনা হিসেবে দর্শনার্থীদের কাছে মিলছে অঙ্কুশের পুজোর আন্তরিক আহ্বান। খড়্গপুর থেকে এসেছে বাজনাদাররা। শুক্রবার নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সন্ধ্যায় নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘পরের উপকার কর না’ নাটকে ছোটদের অভিনয় সবাইকে মুগ্ধ করেছে। অঙ্কুশের মহিলা সদস্যরা বলেন, পুজোর কয়েকদিন আমরা সবাই একান্নবর্তী পরিবারের সদস্য হয়ে উঠি। কেউ পুজোর জন্য রাত জেগে নারকেল নাড়ু তৈরি করে, কেউ উপাচার সাজায়, কেউ আবার চাঁদা সংগ্রহ করে। আবার পুজোর সময় সবাই মিলে ভোগ রান্না করি। সারা বছর বিভিন্ন কাজে সবাই ব্যস্ত থাকি। কিন্তু, দীপাবলি উৎসব সবাইকে একসূত্রে গেঁথে দেয়। অঙ্কুশ ক্লাবের সদস্য অলকেশ পন্ডা বলেন, মহিলারাই পুজো পরিচালনা করে। পরিবারের পুরুষ সদস্যরা এখানে আমন্ত্রিত সদস্যপদ পান। দীপাবলির পর অঙ্কুশের উদ্যোগে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বেড়াতে যাওয়া হয়। ছোটদের জন্য শিক্ষামূলক ভ্রমণকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়।-নিজস্ব চিত্র