নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্ৰাম: হাতির ভয়ে থমকে গেল বন লাগোয়া এলাকায় আবাস সমীক্ষার কাজ। উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার আবাস সমীক্ষক দলের কয়েকজন সদস্য ঝাড়গ্ৰাম ব্লকের নেদাবহড়া পঞ্চায়েতের চাকুয়া গ্ৰামে হাতির আক্রমণ থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পান। প্রশাসনিক স্তরে সেই ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায়। হাতির উপদ্রব আছে এমন এলাকায় কীভাবে আবাস সমীক্ষার কাজ হবে তা নিয়ে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা আলোচনায় বসেন। বন বিভাগের সঙ্গে এরপরেই যৌথভাবে কাজ করার সিদ্ধান্ত হয়। আবাস সমীক্ষকদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশাসন উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
ঝাড়গ্ৰামের জেলাশাসক সুনীল আগরওয়াল বলেন, আবাস সমীক্ষকদের নিরাপত্তার বিষয়টিতে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বন বিভাগের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আবাস সমীক্ষকদের বন বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে কাজ করতে বলা হয়েছে। আবাস সমীক্ষক দলের সদস্যরা জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় কাজ করতে যেতে ভয় পাচ্ছেন। তাঁদের সঙ্গে নিরাপত্তার কর্মী দেওয়ার দাবি তুলেছেন। যার জেরে জঙ্গল লাগোয়া গ্ৰামে আবাস সমীক্ষা থমকে গিয়েছে। প্রশাসনের অভ্যন্তরে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। প্রসঙ্গত, ঝাড়গ্ৰামে গত আগস্ট মাস থেকে হাতির হানায় একাধিক ব্যক্তির মৃত্যু ও জখম হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সাধারণ মানুষরা যা নিয়ে আতঙ্কিত। হোয়াটসঅ্যাপ গ্ৰুপে হাতির অবস্থান দেখে জঙ্গল এলাকার মানুষ চলাফেরা করছেন। হাতির দলের সামনে পড়ে যাওয়ার ঘটনা তারপরেও থামেনি। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আবাস সমীক্ষক দলের নিরাপত্তা দিতে জেলার বন বিভাগের আধিকারিকদের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। সমীক্ষক দলের সদস্যদের হাতির আগাম অবস্থান জেনে এলাকায় সার্ভের কাজে যেতে বলা হয়েছে। ব্লকের আধিকারিক ও স্থানীয় পঞ্চায়েতের সদস্যদের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাতে হাতির হামলা হলে দ্রুত পদক্ষেপ করা যায়। ঝাড়গ্ৰামে জেলা প্রশাসনের আবাস দপ্তরের আধিকারিক দিলীপ মিশ্র বলেন, আবাস সমীক্ষকদের নিরাপত্তার বিষয়ে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বন বিভাগের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। আবাস সমীক্ষকদের বন বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে কাজ করতে বলা হয়েছে। যাতে তাঁরা হাতির আগাম অবস্থান জানতে পারেন। আলাদা করে নিরাপত্তা কর্মী দেওয়ার বিষয়ে আমাদের কাছে এখনও কোনও আবেদন আসেনি। আবেদন এলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। নেদাবহড়া গ্ৰাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান গোপাল মুর্মু বলেন, আবাস সমীক্ষক দলের সদস্যরা সেদিন আগাম না জানিয়ে এই এলাকায় এসেছিলেন। যার জেরে হাতির হামলার মুখে পড়ে যান। সৌভাগ্যক্রমে বড় কিছু ঘটেনি। এইসব এলাকার মানুষ হাতির খোঁজখবর সংক্রান্ত হোয়াটসঅ্যাপ গ্ৰুপে হাতির অবস্থান জেনে চলাফেরা করেন। সমীক্ষার কাজ করতে গেলে এই এলাকায় হাতির অবস্থান জেনে কাজ করতে হবে। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের তরফে সমীক্ষক দলকে সবরকম সহযোগিতার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। -নিজস্ব চিত্র