• সরকারি আবাসের লোভে গোয়াল ও রান্নাঘরেই বসবাস বহু মানুষের
    বর্তমান | ০২ নভেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া: দীর্ঘদিন ধরে বাড়ির অপেক্ষায় থেকে কেউ তৈরি করে ফেলেছেন পাকা বাড়ি। কারও বা পরিবারের সদস্য পেয়ে গিয়েছেন চাকরি। আবার আবাস প্লাসের তালিকা যাচাই করে ২০২২ সালের আবাস প্রাপকের যে তালিকা তৈরি হয়েছিল, তাতেও ঢুকে বসে রয়েছে বেনো জল। দোতলা, পাকা বাড়ির মালিকেরাও সরকারি বাড়ির লোভে পাকা বাড়ি ছেড়ে থাকতে শুরু করেছেন মাটির বাড়িতে! পুরুলিয়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক(জেলা পরিষদ) রানা বিশ্বাস বলেন, স্বচ্ছতার সঙ্গে বিন্দুমাত্র আপস করা হবে না। কোনওভাবেই অযোগ্যদের নাম চূড়ান্ত তালিকায় থাকবে না। একেবারে ‘সুপার চেকিং’ হচ্ছে। প্রকৃত প্রাপকেরাই একমাত্র বাড়ি পাবে।’ জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৭-’১৮ সালে সমীক্ষা করে আবাস প্রাপকদের একটি তালিকা তৈরি হয়েছিল। সেই তালিকা পাঠানো হয়েছিল কেন্দ্রের কাছে। ২০২২ সালে কেন্দ্র যখন আবাস যোজনায় বাড়ি দেবে বলে ঘোষণা করে, তখন সেই তালিকা ধরেই নতুন করে শুরু হয়েছিল যাচাই। ঝাড়াই বাছাই করে পুরুলিয়া জেলায় মোট ১ লক্ষ ১৮ হাজার ৬০০জনের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়। যদিও কথা দিয়েও কথা রাখেনি কেন্দ্র। মেলেনি আবাস যোজনার বাড়ি। 

    এবছর লোকসভা নির্বাচনের আগেই আবাস যোজনার বাড়ি দেবে বলে ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইমতো ২০২২ সালের চূড়ান্ত তালিকা ধরেই শুরু হয় সমীক্ষা। দেখা যায়, ২০২২ সালে যে তালিকা তৈরি হয়েছিল, তাতেও ঢুকে বসে রয়েছে বহু অযোগ্য উপভোক্তা। প্রশাসন সূত্রের খবর, তালিকায় যেমন রয়েছে দোতলা তিনতলা বাড়ির মালিক, তেমনই রয়েছে বহু তৃণমূল নেতার পরিবারের সদস্য। তবে, এতকিছু থাকা সত্ত্বেও সরকারি বাড়ি হাতছাড়া করতে তাঁরা নারাজ। সার্ভে টিমকে করজোড়ে অনুরোধ, ‘স্যার, দেখবেন নাম যেন বাদ না যায় ’। প্রসঙ্গত, পুরুলিয়া জেলায় ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত এক লক্ষ আট হাজার ৪৮৩জন উপভোক্তার বাড়িতে সার্ভে সম্পন্ন হয়েছে। অর্থাৎ ৯০শতাংশের বেশি সার্ভে হয়েছে। সার্ভে টিমকে বোকা বানাতে বহু জায়গায় উপভোক্তারা নানা কৌশল অবলম্বন করেছেন। পাকা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও মাটির রান্না ঘর, গোয়াল ঘরকে দেখিয়ে নাম তোলার চেষ্টাও হয়েছে। এরকম জালিয়াতি করতে গিয়ে বহু উপভোক্তা ধরাও পড়েছে। বিরোধীদের আবার অভিযোগ, ২০২২ সালের যখন চূড়ান্ত তালিকা তৈরি হয়েছিল, সেই সময় বেছে বেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলের কর্মীদের নাম বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। 
  • Link to this news (বর্তমান)