যৌন হেনস্তায় মৃত্যু শিশুকন্যার! গণপিটুনিতে হত অভিযুক্ত
বর্তমান | ০২ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, ফালাকাটা: ছ’বছরের শিশুকন্যাকে যৌন হেনস্তা ও অচৈতন্য অবস্থায় পুকুরে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল প্রতিবেশী এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। পুকুর থেকে শুক্রবার ওই শিশুর দেহ উদ্ধার হতেই ক্ষোভে ফুঁসতে থাকে ফালাকাটা ব্লকের খগেনহাট। মুহূর্তের মধ্যেই গণরোষ আছড়ে পড়ে অভিযুক্তের উপর। উত্তেজিত গ্রামবাসীরা অভিযুক্তকে বেদম মারধর করে। ঘটনাস্থলে পুলিস পৌঁছে তাকে উদ্ধার করে ফালাকাটা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত বলে জানান। পুলিস জানিয়েছে, গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। উত্তেজিত জনতা অভিযুক্তের বাড়িও ভাঙচুর করেছে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার দুপুরে স্থানীয় বাসিন্দা মোনা রায় (৪৫) প্রতিবেশী শিশুকন্যাকে পুজো মণ্ডপের সামনে থেকে জিলিপি খাওয়ার লোভ দেখিয়ে নিয়ে যায়। মোনা ওই শিশুকে নিয়ে যাচ্ছে, এটা স্থানীয় কয়েকজন দেখেন। বিকেল গড়ালেও মেয়ে বাড়ি না ফেরায়, খোঁজাখুঁজি শুরু করে পরিবারের লোকজন। স্থানীয় একব্যক্তির কাছ থেকে শিশুটির পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন, বাড়ি থেকে ৫০ মিটার দূরে পুকুর পাড়ে ওই ব্যক্তিকে দেখা গিয়েছিল। শিশুকন্যার বাবা দ্রুত পুকুর পাড়ে গিয়ে দেখেন মেয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় জলে ভাসছে। জল থেকে তুলে মেয়েকে ফালাকাটা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে আসেন তাঁরা। কিন্তু চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।
শিশু মৃত্যুর খবর গ্রামে চাউর হতেই উত্তেজিত জনতা মোনা রায়কে খুঁজতে শুরু করে। বাড়িতে গেলেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে অবশ্য গ্রামেই অভিযুক্তকে খুঁজে পাওয়া যায়। খোঁজ মিলতেই উত্তেজিত লোকজন ঘিরে ধরে মারধর শুরু করে। ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় চলে আসে ফালাকাটা থানা ও জটেশ্বর ফাঁড়ির পুলিস। গণপিটুনিতে গুরুতর জখম ব্যক্তিকে ফালাকাটা সুপার স্পেশালিটিতে নিয়ে আসা হলে মৃত বলে ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।
এদিকে শিশুকন্যার মৃত্যুতে কান্নায় ভেপে পড়েছেন অভিভাবকরা। তাঁরা বলেন, অভিযুক্তের সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্কই নেই। আমরা ওর সঙ্গে কথাবার্তাও বলি না। লোকটি প্রথম থেকেই মেয়েকে খারাপ নজরে দেখত। তবে এমন কিছু করবে ভাবতেও পারিনি। এ বিষয়ে ফালাকাটা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে সুপার ডাঃ শুভাশিস শী বলেন, দু’টি মৃতদেহ হাসপাতালে এসেছে। ময়নাতদন্তের পরই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। ফালাকাটা থানার আইসি শমিত তালুকদার বলেন, গণপিটুনিতে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। কী কারণে গণপিটুনি, খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।