নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: উৎসব পর্ব মিটবে। তার মধ্যে ছ’টি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন হয়ে যাবে। এরপরই সংগঠনের বেশকিছু ক্ষেত্রে রদবদল করতে চলেছে তৃণমূল। দলীয় সূত্রে এমনটাই খবর। লোকসভা ভোটের ফলের নিরিখে যে এলাকায় তৃণমূলের ফল খারাপ হয়েছে, সেখানকার ব্লক, অঞ্চলের সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্তদের দিকেই নজর রয়েছে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের। এছাড়া দলের যে সমস্ত পদাধিকারীর পারফম্যান্স খারাপ, তাঁদেরও বদল করা হবে বলে দলীয় সূত্রে খবর।
২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে হাতে রয়েছে মাত্র ১৫ মাস। আগামী বছরের গোড়া থেকেই ছাব্বিশের মহারণের জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দেবে তৃণমূল। ২০২৫ সালটি তৃণমূলের কাছে রাজনৈতিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। বুথ স্তর পর্যন্ত সংগঠনকে শক্তিশালী করার কাজ চালাবেন জোড়াফুল শিবিরের সৈনিকরা। এরই মধ্যে সংগঠনের যে জায়গাগুলিতে ফাঁক-ফোকর রয়েছে, তা ভরাট করে নিতে চায় তৃণমূল। সেই সূত্রেই তৃণমূলের অন্দরে খবর, উৎসব পর্ব মিটলেই দলের অভ্যন্তরে সাংগঠনিক পরিসরে রদবদল করা হবে। এর আগে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, জনগণের সেবাই হল তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের প্রধান কর্তব্য। পাশাপাশি একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ইঙ্গিত দেন, পারফরম্যান্সই হল শেষকথা। তিনমাসের মধ্যেই ফল পাবেন।
ফলে আগামী কিছুদিনের মধ্যেই সাংগঠনিক একটি ঝাঁকুনি দেওয়া হবে বলেই তৃণমূল সূত্রে খবর। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, লোকসভা ভোটে শহরাঞ্চলে তৃণমূলের আশানুরূপ ফল হয়নি। ওয়ার্ড এবং গোটা পুরসভাতেও একাধিক জায়গায় পিছিয়ে তৃণমূল। রাজ্য সরকারের যখন এত উন্নয়নমূলক কাজ চলছে, তখন সাংগঠনিক কোন গাফিলতির জন্য শহরাঞ্চলের মানুষ তৃণমূলের থেকে মুখ ফিরিয়েছেন, সেটাই পর্যালোচনা করছেন নেতৃত্ব। তার ভিত্তিতে ওয়ার্ড সভাপতিসহ শহরাঞ্চলের যে-সমস্ত নেতাকে দলীয় পদ দেওয়া হয়েছিল, তাঁরা সেই পদ আঁকড়ে থাকলেও সাংগঠনিক কাজে গাফিলতি করছেন কি না, তা নিয়ে নজরদারি চালাচ্ছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। একাধিক জেলা সভাপতি এবং শাখা সংগঠনে অন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীরা সঠিকভাবে কাজ করছেন না বলে দলের নজরে এসেছে। তাঁদের পদেও বদলের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া দলকে বারবার অস্বস্তির মুখে ফেলছেন, বিতর্কে জড়াচ্ছেন, কোন্দল করছেন—দলের নজরে এমন নেতাদেরও কার্যকলাপ। ওইসঙ্গে যাঁরা শুধুমাত্র ব্যক্তি স্বার্থকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন, তাঁদেরকেও রেয়াত করা হবে না বলে তৃণমূল সূত্রে হুঁশিয়ার শোনা গিয়েছে।