জঙ্গিদের কৌশল, প্রযুক্তি নিয়ে দেশের সব রাজ্যের এসটিএফকে বিশেষ পাঠ, উদ্যোগ এনআইএ’র
বর্তমান | ০২ নভেম্বর ২০২৪
শুভ্র চট্টোপাধ্যায়, কলকাতা: প্রতিদিনই পাল্টাচ্ছে জঙ্গি সংগঠনের কার্যকলাপ। তাদের গতিবিধি ও কাজকর্মের পদ্ধতির সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনী তাল মেলাতে না পারলে যে কোনও সময় বড়সড় নাশকতা ঘটতে পারে। হালে তারা যে প্রযুক্তি ব্যবহার করে এবং যে কায়দায় জঙ্গি কার্যকলাপ চালায়, সে ব্যাপারে সব রাজ্যের এসটিএফ অফিসারদের অবগত করতে পাঠ দেবে এনআইএ। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে দিল্লিতে এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলে এনআইএ সূত্রে খবর।
জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠী নিয়ে নিয়মিত গবেষণা করে। তাদের একের পর এক তল্লাশিতে একাধিক জঙ্গি সংগঠনের মাথারা ধরা পড়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে, তাদের শিকড় লুকিয়ে রয়েছে পাকিস্তান ও সিরিয়ায়। পাশাপাশি বাংলাদেশও বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠীর আঁতুড়ঘর হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন এজেন্সির হাত থেকে নিজেদের ও সংগঠনকে বাঁচাতে প্রতিদিন কৌশলে বদল আনছে তারা। এক সময়ে ‘দাওয়াত’ দিয়ে সদস্যপদ দেওয়া হতো জঙ্গি সংগঠনে। কে বা কারা তাদের দাওয়াত দিত, তার আঁচ পেয়ে জঙ্গিদের বেশ কয়েকজনকে পাকড়াও করতে সক্ষম হয়েছিলেন অফিসাররা। তাই তারা কৌশল বদলে দাওয়াতের বদলে এখন অনলাইনে সদস্যপদ দিচ্ছে। একারণে কয়েকশো ভুয়ো প্রোফাইল খোলা হয়েছে বিভিন্ন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে। তবে ২৪ বা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ওই প্রোফাইলগুলি ডি-অ্যাক্টিভেট করে দেওয়া হচ্ছে। তদন্তকারী এজেন্সিকে ‘বোকা বানাতে’ তারা ব্যবহার করছে প্রক্সি সার্ভার। এছাড়াও নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়াতে তারা উন্নত প্রযুক্তি অসংখ্য অ্যাপ তৈরি করেছে। সেইসব অ্যাপের খবর জানেনই না তদন্তকারী অফিসাররা। এক পদ্ধতিতে নয়, বিদেশ থেকে নানা পথে চলছে তহবিল সংগ্রহের কাজ। ফলে টাকা লেনদেনের সূত্র খুঁজতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রেই হোঁচট খেতে হচ্ছে গোয়েন্দাদের।
এনআইএ বিভিন্ন ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে দেখেছে, বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠন আল কায়দা বা আইএসের ছাতার তলায় এসে কাজ করতে আগ্রহ দেখাচ্ছে। যাতে তহবিলের পাশাপাশি উন্নত প্রযুক্তির সাহায্য মেলে। সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠন নতুন করে ভারত বিরোধী কাজ চালাচ্ছে। সেই তথ্য ইতিমধ্যেই সংগ্রহ করেছেন এনআইএর অফিসাররা। জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির বদলে যাওয়া কৌশল ও প্রযুক্তির ব্যাপারে আপাতত যে সব তথ্য হাতে পেয়েছেন তদন্তকারী সংস্থার অফিসাররা, সেসবই সব রাজ্যের এসটিএফের অফিসারদের সামনে তুলে ধরতে চান তাঁরা। পাশাপাশি সমন্বয় বাড়ানোর উপর জোর দিতে চাইছেন তাঁরা। যাতে কোনও রাজ্যে জঙ্গি সংগঠনের কেউ ধরা পড়লে সেই তথ্য দ্রুত জানতে পারে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী এজেন্সি সহ অন্য রাজ্যের পুলিস।