নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কালীপুজোর রাত থেকে দীপাবলির ভোর—শব্দের দাপট অব্যাহত রইল শহর কলকাতায়। শুক্রবার সকাল ৭টা পর্যন্ত কলকাতা পুলিস নিষিদ্ধ বাজি পোড়ানোর অভিযোগে মোট ২৬৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। পাশাপাশি ৭১৭ কেজি নিষিদ্ধ বাজিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত বাড়তেই পাল্লা দিয়ে বেড়েছে শব্দবাজির দাপট। বিশেষ করে বহুতল আবাসনগুলিতেই মাত্রা ছাড়িয়েছে শব্দের আস্ফালন। এই তাণ্ডব ভোগ করতে হয়েছে শহরবাসীকে।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আধিকারিকদের নিয়ে বাগুইআটি, লেকটাউন এলাকা পরিদর্শন করেন পরিবেশ কর্মীরা। পরিবেশ কর্মীদের সংগঠন ‘সবুজ মঞ্চ’র তরফে নব দত্ত বলেন, ‘তখন প্রায় সাড়ে ১২টা বাজে। প্রায় ৪৫ মিনিট ওই এলাকায় থেকে মনে হয়, যেন যুদ্ধক্ষেত্রে আছি। এক নাগাড়ে বহুতল থেকে শব্দবাজি আছড়ে পড়ছিল। পুলিস ডাকা হল। তাঁরা এসে ধর-পাকড়ের চেষ্টা করলেন। কিন্তু বহুতলের গেট কেউ খুলল না।’ শেষ পর্যন্ত পার্কের পাশ থেকে তিন ব্যক্তিকে বাজি ফাটানোর অভিযোগে পুলিস গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। পরিবেশ কর্মীদের অভিযোগ, ‘নিষিদ্ধ বাজি উত্পাদন ও বিক্রি বন্ধ হওয়া উচিত। এ বছর খোলা বাজারে দেদার শব্দবাজি বিক্রি হয়েছে। যার ফলে শব্দবাজির এত বাড়বাড়ন্ত’। কলকাতা পুলিস এদিন সকাল ৭টা পর্যন্ত অভব্য আচরণের জন্য ৩২৮ জনকে ও জুয়া খেলার অভিযোগে আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে। কলকাতা ট্রাফিক পুলিস হেলমেট ছাড়া বাইক চালানো, বেপরোয়া গতি ও নেশা করে বাইক চালানো এবং অন্যান্য কারণে মোট ৮৪১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। প্রায় ৮০ লিটার নিষিদ্ধ মদ বাজেয়াপ্ত করেছে। এই চিত্র শুক্রবার খুব একটা পাল্টায়নি। বিশেষ করে বহুতল আবাসনগুলি থেকে শব্দবাজির প্রচুর অভিযোগ আসতে থাকে। অভিযোগ জানানোর জন্য পরিবেশ কর্মীদের সংগঠন ‘সবুজ মঞ্চ’ কন্ট্রোল রুম খুলেছিল। সেই কন্ট্রোল রুমে এদিন রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত মোট ১০টি শব্দবাজির অভিযোগ এসেছে। মূলত বেহালা, বিধাননগর, কালিকাপুর, গরফা, মুকুন্দুপুর, কসবা এলাকা থেকে শব্দবাজির অভিযোগ এসেছে। পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কন্ট্রোল রুমে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত মোট ৮টি শব্দবাজির অভিযোগ এসেছে। শহরের বুকে মানিকতলা, পাটুলি, বাঁশদ্রোণী প্রভৃতি এলাকা থেকে অভিযোগ এসেছে। রাত ৯টা থেকেই কসবা (৮৫.২ ডেসিবল), বিরাটি (৮২.২ ডেসিবল), টালিগঞ্জ (৭৮.৭ ডেসিবল), পাটুলি (৭৩.৩ ডেসিবল), বাগবাজার (৮০.৭ ডেসিবল) এলাকায় দূষণের মান বেশ বেড়ে যায়।