• ‘কৃত্রিম যানজট’, কাঠগড়ায় পুলিসই, কালীপুজোর রাতে নাকাল বারাসতবাসী
    বর্তমান | ০২ নভেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: ফি-বছরের মতো এবারও বারাসতে কালীপুজো দেখতে লক্ষাধিক মানুষের ভিড় উপচে পড়ে। দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে যান নিয়ন্ত্রণ সহ একগুচ্ছ পরিকল্পনা করেছিল পুলিস। কিন্তু দিনের শেষে সেই পুলিসের বিরুদ্ধেই উঠল অতিসক্রিয়তার অভিযোগ। সাধারণ দর্শনার্থী থেকে বাইক নিয়ে যাতায়াত করা ফুড ডেলিভারি বয়, ভুগলেন সবাই। অভিযোগ উঠল, পুলিসের অতিরিক্ত কড়াকড়ির কারণে কালীপুজোর রাতে বারাসত শহরজুড়ে ‘কৃত্রিম যানজট’ তৈরি হয়েছিল। যান নিয়ন্ত্রণ করতে স্থানীয় প্রাইভেট কার, বাইককে ‘ভেহিকল পাস’ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ, পুলিস নিজেই সেই পাসযুক্ত গাড়ি আটকেছে। কখনও আবার পুলিসের সঙ্গে তুমুল তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়েছেন শহরের পুজো উদ্যোক্তা। সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদেরও বিভিন্ন জায়গায় আটকে দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে পুলিসের ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট মহলে। 

    পুলিসের তরফে দেওয়া ‘ভেহিকল পাস’ কোনও কাজেই লাগেনি বলে দাবি ভুক্তভোগীদের। মূল সড়কের ব্যারিকেড পর্যন্ত পৌঁছলেই কর্তব্যরত পুলিসকর্মীরা সেই গাড়ি আটকে দিয়েছেন। ফলে পুলিসের ছাড়ের স্টিকার লাগানো একের পর এক চারচাকা গাড়ি সার দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে। তৈরি হয় তীব্র যানজট। কলোনি মোড়, হেলাবটতলা, চাঁপাডালি, ১১ নম্বর রেলগেট, ময়না সহ বিভিন্ন এলাকায় এই ‘কৃত্রিম যানজটে’ জেরবার হতে হয়েছে বলে অভিযোগ। বাইক আরোহীদের ক্ষেত্রে সমস্যা চরমে উঠেছিল। স্থানীয় বাসিন্দা রবীন দাস বলেন, ‘বিগত বছরগুলিতে পাস থাকলে বাইক নিয়ে যাওয়ায় কোনও সমস্যা হতো না। এবার এত কড়াকড়ি কেন করল, বুঝতে পারলাম না। পুলিসই তো কৃত্রিম যানজট তৈরি করেছে।’  নবপল্লির বাসিন্দা সোমা সেন বলেন, ‘পাস থাকা সত্ত্বেও পুলিস এমন দুর্ব্যবহার করল যে মহিলা হিসেবে যথেষ্ট অপমানিত বোধ হয়েছে। গাড়ি ঘুরিয়ে দিল। বাড়ি ঢুকতে হল অনেকটা ঘুরে।’ পেশায় ফুড ডেলিভারি বয় ঋজু রায় বলেন, ‘আমি প্রায় সাতবছর ধরে বারাসতে ডেলিভারি বয়ের কাজ করছি। এত কড়াকড়ি কখনও দেখিনি। ঘুরপথে যেতে অনেকটা সময় লেগে যাচ্ছে। কাস্টমার ক্ষুব্ধ হচ্ছেন। আমাদের রুটিরুজিতে টান পড়ছে।’ বৃহস্পতিবার রাতে বারাসতের এক পুজো কমিটির সদস্য বাইকে পাস সাঁটিয়ে যাচ্ছিলেন। সেই সময় ব্যারিকেডের কাছে পুলিস তাঁকে আটকায়। শুরু হয়ে যায় তুমুল বচসা। তারপর হঠাৎ এক পুলিসকর্মী তাঁর জামার কলার ধরে টানতে টানতে নিয়ে যান। পুলিসের কর্তারা গোটা ঘটনা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখেন বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দা থেকে দর্শনার্থীদের একাংশ পুলিসের ভূমিকায় বিস্ময় প্রকাশ করলেও এনিয়ে বারাসত পুলিস জেলার অতিরিক্ত পুলিস সুপার স্পর্শ নীলাঙ্গী বলেন, ‘জরুরি কাজের জন্য ওই পাস দেওয়া হয়েছে। কেউ কেউ তা দেখিয়ে ব্যক্তিগত কাজ সারতে চাইছেন। ফলে তা নিয়ে পুলিসের সঙ্গে বচসা হচ্ছে। দর্শনার্থীদের সুবিধার্থেই পুলিস কাজ করছে।’-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)