উত্তর ২৪ পরগনার কীর্তিপুর-২ পঞ্চায়েতের গলাসিয়া সেবক সঙ্ঘ সংলগ্ন মাঠে এ দিন গণ-কনভেনশন ছিল নাগরিক সমন্বয় মঞ্চ, নাগরিকপঞ্জি-বিরোধী যুক্ত মঞ্চ এবং সারা বাংলা মাদ্রাসা শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির যৌথ উদ্যোগে। বক্তা হিসেবে ছিলেন ইমতিয়াজ় আহমেদ মোল্লা, উমর ওয়েস, সইদুল ইসলাম, সেখ মেহবুব আহমেদ এবং আইএসএফের চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকী। ছিলেন হাড়োয়া বিধানসভা উপনির্বাচনে বাম সমর্থিত আইএসএফ প্রার্থী পিয়ারুলও। সভাপতিত্ব করেছেন নাগরিকপঞ্জি-বিরোধী যুক্ত মঞ্চের আহ্বায়ক প্রসেনজিৎ বসু। বস্তুত, উপনির্বাচনে বামফ্রন্ট এবং আইএসএফের যে যৌথ প্রচার সমন্বয় কমিটি তৈরি হয়েছে, তার আহ্বায়ক করা হয়েছে প্রসেনজিৎ এবং আহমেদ আলি খানকে। যুক্ত মঞ্চের তরফে প্রসেনজিতের বক্তব্য, ‘‘তৃণমূল কংগ্রেসের স্বৈরাচারী, মাফিয়া, সিন্ডিকেট-রাজ ও বিজেপির মেরুকরণের রাজনীতির বিরুদ্ধে বামফ্রন্ট-আইএসএফ সমঝোতাকে আমরা পূর্ণ সমর্থন করছি।’’
কনভেনশনে এ দিন ওয়াকফ সংশোধনী বিল, ২০২৪-এর তীব্র সমালোচনা করে দেশের সংবিধান প্রদত্ত ধর্ম পালনের স্বাধীনতা এবং ধর্মীয় সম্প্রদায়ের নিজস্ব ধর্মীয় বিষয় পরিচালনা করার স্বাধীনতার পক্ষে সওয়াল করেছেন বক্তারা। বাংলায় সরকারি নিয়োগের ক্ষেত্রে ওবিসি সংরক্ষণের আইনি জটিলতা তৈরি হয়েছে ২০১২ সালে পাশ হওয়া আইনের কিছু ধারা কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে বাতিল হওয়ায়। এই জট কাটাতে বিধানসভায় নতুন করে বিল পাশ করানোর পাশাপাশি সমাজের অনগ্রসর অংশের আর্থ-সামাজিক মানোন্নয়নের লক্ষ্যে জাত-ভিত্তিক জনগণনার দাবি তুলেছেন নওসাদেরা। পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য বিশেষ দফতর চালু করে তাঁদের জীবন-জীবিকা রক্ষায় উদ্যোগ, মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির পরিকাঠামো উন্নয়ন, শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর বেতন-বৈষম্য দূর করার দাবিও উঠেছে।
প্রসঙ্গত, লোকসভা ভোটে আসনের দাবি নিয়ে টানাটানির জেরে আইএসএফের সঙ্গে ‘বিচ্ছেদ’ হয়েছিল বামফ্রন্টের। সেই আইএসএফ-কে কেন হাড়োয়া আসন এই উপনির্বাচনে ছেড়ে দেওয়া হল, সেই প্রশ্ন আছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সিপিএমের ছাত্র-যুব ফ্রন্টের একাংশে। সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব অবশ্য ফ্রন্টে যুক্তি দিয়েছেন, লোকসভায় আলাদা লড়েও আইএসএফ কিন্তু কোথাও বামফ্রন্টের তরফে ফরওয়ার্ড ব্লকের, কোথাও সিপিএম প্রার্থীর চেয়ে বেশি ভোট পেয়েছিল। সেই অঙ্ক মাথায় রাখার পাশাপাশিই ‘বৃহত্তর স্বার্থে’ই সমঝোতা প্রয়োজন। নাগরিক মঞ্চগুলিও সেই বৃহত্তর স্বার্থে একজোট হয়েছে।