কাঁধে প্রতিমা তুলে চলে ‘কালী দৌড়’! ৩৫০ বছরের প্রথা আজও অক্ষত মালদায়
হিন্দুস্তান টাইমস | ০২ নভেম্বর ২০২৪
কাঁধে রাখা হয় কালী প্রতিমা। আর তাঁকে কাঁধে নিয়েই চলে দৌড়। এমন 'কালী দৌড়' ঘিরে প্রতিযোগিতার আসর বলে মালদার চাঁচলে। এই রীতি ৩৫০ বছরের। আর ৩৫০ ধরে তা অমলীন রেখেছেন এখানের বাসিন্দারা। মালদার চাঁচলের মালতীপুরে এই কালীদৌড় প্রতিযোগিতা আয়োজিত হয়েছে। আর তা দেখতে এবারেও অগণিত মানুষের ভিড় হয়েছে।
মালতীপুর এলাকার আটটি কালী প্রতিমাকে কাঁধে নিয়ে ছোটেন এলাকাবাসী। কালী দৌড় প্রতিযোগিতাকে ঘিরে রচিত হয় সম্প্রীতির এক আশ্চর্য আবহ। এই প্রতিযোগীতার একটি নিয়ম রয়েছে। সেই নিয়ম হল, দৌড়ে নিয়ে যাওয়ার পর যাদের কালী প্রতিমা অক্ষত অবস্থায় থাকবে, তাদের প্রতিমাকেই প্রথমে বিসর্জন দেওয়া হবে। নিজেদের পূজিত কালী প্রতিমা কাঁধে করে নিয়ে ঘাটের দিকে দৌড়তে থাকেন উদ্য়োক্তারা। এদিকে, প্রতিমা অক্ষত রাখার চ্যালেঞ্জও থেকে যায়। এককালে রাজ আমলে এই রীতি প্রচলিত হয়েছিল মালদায়। আর সেই রীতিকেই এখনও ধরে রেখেছে মালদার চাঁচল। শুক্রবার রাতে কালী দৌড় প্রতিযোগিতাকে কেন্দ্র করে তৈরি হল এক অদ্ভুত পরিবেশ। রাতের অন্ধকারে দেবী মূর্তি নিয়ে অগণিত মানুষ ছুটে চলেছেন। একদিকে বাদ্যি, অন্যদিকে, আলোর রোশনাই, বাজির শব্দ। সব মিলিয়ে এক অদ্ভূত পরিবেশের মধ্য দিয়ে এই রীতি পালিত হল।
মূলত, এই কালীদৌড় পালিত হয় আটটি কালীমূর্তি নিয়ে। হ্যান্টা,বাজার,শ্যামা,বুড়ি,হাট,চনকা কালী সহ আটটি প্রতিমার দৌড় হয় এই মালদার চাঁচল অঞ্চলে। যাতে কোনও রকমের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি না তৈরি হয়, তার জন্য কড়া পুলিশি পাহাড়া ছিল। উপস্থিত ছিলেন চাঁচলের এসডিপিও সোমনাথ সাহা ও চাঁচল থানার আইসি পুর্ণেন্দু কুণ্ডু সহ পুলিস বাহিনী।ছিলেন মালতীপুরের বিধায়ক আব্দুর রহিম বকসিও। মূলত এই অনুষ্ঠান ঘিরে চাঁচল মহকুমার কয়েক হাজার মানুষ জড়ো হন। দুই কালীপ্রতিমা যখন মুখোমুখি হয়, তখন এলাকায় উলুধ্বনি দেওয়ারও প্রচলন রয়েছে। কার্যত এক অবর্ণনীয় পরিবেশ তৈরি হয় সেখানে। সেই ঘটনার সাক্ষী রইলেন বহু মানুষ।