অভিষেক চৌধুরী, কালনা: শ্রদ্ধেয় রতন টাটা ‘স্যর’। তাঁরই জীবনাদর্শে মুগ্ধ দুই ভাই। তাই ভাইফোঁটার আগে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে উপলক্ষে দেড় কেজি ওজনের ক্ষীর ও সন্দেশ দিয়ে রতন টাটার মূর্তি বানিয়ে নজর কাড়লেন কালনা শহরের ছোট দেউড়ি বাজারের মিষ্টি বিক্রেতা। বিশেষ এই মিষ্টি দেখে প্রশংসা না করে ফিরছেন না ক্রেতারা। ভাইদের মন রেখে সীমিত সাধ্যের মধ্যে বোনরাও যাতে কেনাকাটা করতে পারেন, তার জন্য চড়া দামের ছানার মিষ্টিতেও হরেক রকমভাবে সাজিয়ে তুলেছে কালনার এই দোকান। অন্তত তিনশো রকমের সুস্বাদু মিষ্টির সম্ভার রয়েছে তাঁদের। দামও নাগালেই। আর তাই স্বাভাবিক কারণেই এই দোকানে জেলা ও ভিনজেলার ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছেন শুক্রবার থেকেই।
কালনা শহরের ১৪ নং ওয়ার্ডের ছোট দেউড়ি বাজারে থাকা এই মিষ্টির দোকানটি কয়েক বছর আগে ‘লঙ্কার রসগোল্লা’ তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল। আর এবারের ভাইফোঁটায় রতন টাটার মূর্তি সম্বলিত মিষ্টি বানিয়ে সকলের নজর কেড়েছেন দোকানি। এনিয়ে দোকানের মালিক, সম্পর্কে দুই ভাই, অনির্বাণ দাস ও অরিন্দম দাস বলছেন, “স্যর রতন টাটার পথ চলাকে আমরা অনুসরণ করি। তাঁর আদর্শে আমরা উদ্বুদ্ধ। তাই তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে তাঁরই একটি মিষ্টি মূর্তি তৈরি করা হয়েছে। দেড় কেজি ওজনের ক্ষীর ও সন্দেশ দিয়ে বানানো এই মিষ্টির দাম রাখা হয়েছে ৫০০ টাকা। এটি একটাই তৈরি করা হয়েছে। একজন তা পছন্দ করে আগাম নেবেন বলে জানিয়েও যান। ভ্রাতৃদ্বিতীয়ার দিনই তাঁর হাতে তুলে দেব।”
এর পাশাপাশি ভাইফোঁটার পবিত্র দিনে বোনেরা ভাইদের পাতে যাতে পছন্দের মিষ্টি তুলে দিতে ৭ টাকা দামের জনপ্রিয় ‘চাপ সন্দেশ’ কিনতে পারেন। এছাড়াও ভাইফোঁটা স্পেশাল মিষ্টি হিসাবে থাকছে ১৫ টাকা দামের ‘দই ফুচকা মিষ্টি।’ তবে তেঁতুল গোলা জলে নয়, সন্দেশ দিয়ে ফুচকা তৈরি করে তার ভিতর ক্ষীরের পুরের এই ফুচকা মিষ্টি অনায়াসেই ভাইদের মন জয় করে নেবেন বোনেরা। এছাড়াও থাকছে নিত্যনতুন স্বাদের ৩০ টাকা প্লেটের ‘পিৎজা মিষ্টি’। রয়েছে ৩০ টাকা পিসের ‘পাবদা মাছ’ মিষ্টিও! এছাড়াও নারকেল শাঁস দিয়ে তৈরি কমলালেবু মিষ্টি, বেকড চমচম, চকোলেট বল, কেশর মালাই চমচম, বাটার রোলের মত বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি রয়েছে। এই সব মিষ্টি কিনতে দিনভর ভিড় দেখা যায় দোকানটিতে।
দোকানের মালিক অনির্বাণ দাস বলেন, “ এই মুহূর্তে ছানার দাম বেশ চড়া রয়েছে। ৩০০ টাকা কেজি মূল্যের ছানা দিয়ে মিষ্টি তৈরি করতে গিয়ে ভাবতে হচ্ছে। মিষ্টির দামের কথাটিও যেমন ভাবতে হচ্ছে, তেমনই তার গুণগত মান, স্বাদ, বিভিন্ন রকমের মিষ্টি তৈরির কথাটিও ভাবতে হয়। বোনেদের বাজেটের কথা ভাবতে গিয়ে মিষ্টির দাম আমরা বাড়াতে পারিনি। তাই খুব অল্প লাভেও তাদের সাধ পূরণের চেষ্টা করে চলেছি। শুধু পূর্ব বর্ধমান জেলাই নয়, পার্শ্ববর্তী হুগলি, নদিয়া, বীরভূম জেলার পাশাপাশি কলকাতা থেকেও ক্রেতারা এসে মিষ্টি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।”