নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: কাল, রবিবার ভাইফোঁটা। ভাইফোঁটায় ভাইয়ের পাত মিষ্টি দিয়ে সাজাতে ঘরে ঘরে শুরু হয়েছে তৎপরতা। মিষ্টির জোগান দিতে ব্যস্ততা তুঙ্গে দোকানগুলিতেও। আরামবাগে এবারও ভাইফোঁটা উপলক্ষ্যে হরেক রকমের মিষ্টির ডালি সাজিয়েছে দোকানগুলি। এমনকী, সরবরাহ ঠিক রাখতে কোথাও কোথাও দোকানে মিষ্টির কারিগরের সংখ্যাও বাড়াতে হয়েছে ব্যবসায়ীদের। লক্ষ্মীপুজোর পর থেকেই মিষ্টির দোকানগুলিতে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। শুক্রবার বিভিন্ন দোকানে মিষ্টি কিনতে ভিড় জমান ক্রেতারা।
কালীপুজো এক রাতের হলেও উৎসব চলে প্রায় চার-পাঁচদিন ধরে। মণ্ডপে মণ্ডপে রয়েছে কালী প্রতিমা। এদিন থেকে বিভিন্ন পুজো মণ্ডপে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও শুরু হয়েছে। তারসঙ্গে সমানতালে চলছে ভাইফোঁটার প্রস্তুতিও। আরামবাগ শহরের একাধিক মিষ্টির দোকানে কর্মব্যস্ততা রয়েছে। সেখানে নানা ধরনের মিষ্টি বিক্রি শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। হরেক রকমের সন্দেশের সঙ্গে ডায়াবেটিস রোগীদের কথা ভেবে কম মিষ্টির পদও তৈরি করছেন কারিগররা। ‘ভাইফোঁটা’ লেখা বিশেষ সন্দেশও সাজানো রয়েছে দোকার শোকেসে।
আরামবাগ নেতাজি স্কোয়ারের একটি মিষ্টির দোকানের মালিক অভিজিৎ কোলে বলেন, ভাইফোঁটার সময় প্রতি বছরই মিষ্টির চাহিদা তুঙ্গে ওঠে। এবারও বাজার জমে উঠেছে। অন্যান্য সময় প্রায় ২০ জন কারিগর মিষ্টি তৈরির কাজ করেন। কিন্তু এই সময় আরও পাঁচজনকে রাখতে হয়েছে। তাঁরাই নতুন নতুন মিষ্টি তৈরি করছেন। হরেক রকমের সন্দেশ তৈরি হচ্ছে।
আরামবাগের কালীপুরের এক মিষ্টি ব্যবসায়ী উত্তম মোদক বলেন, এই মরশুমে মিষ্টির চাহিদা থাকলেও কারিগর পাওয়া নিয়ে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। ২০-২২ জন কারিগর একসঙ্গে কাজ করছেন। বেকড রসগোল্লা, রাবড়ি, রসোমালাই, কেশর কালাকাঁদ, নানা রকমের সন্দেশ থাকছে। প্রায় ৬০-৭০ রকমের মিষ্টি তৈরি করা হচ্ছে।
ব্যবসায়ীদের দাবি, ভাইফোঁটা উপলক্ষ্যে কিছুটা দাম বেড়েছে ছানার। তবে মিষ্টির দাম সেভাবে বাড়েনি। আরামবাগ শহরের পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলের মিষ্টির দোকানগুলিতেও ব্যবসায়ীদের ব্যস্ততা চরমে উঠেছে।
খানাকুলের মিষ্টি ব্যবসায়ী শ্রীমন্ত ঘোষ বলেন, ভাইফোঁটায় নতুন সেভাবে কিছু মিষ্টি করা হচ্ছে না। তবে ব্যাপক চাহিদা থাকায় মিষ্টির পরিমাণ বাড়িয়েছি। ভাইফোঁটার দুপুর পর্যন্ত মিষ্টি কিনতে আসেন ক্রেতারা। যাতে কোনও ক্রেতাকে মিষ্টি না নিয়ে ফিরতে হয়, সেইজন্য জোগান বাড়ানো হচ্ছে। কারিগর একজন বাড়ানো হয়েছে।
গোঘাটের মিষ্টি বিক্রেতা বাসুদেব নন্দী বলেন, অন্যান্য দিনের তুলনায় মিষ্টির পরিমাণ কার্যত দ্বিগুণ করা হয়েছে। ক্রেতাদের অবস্থা বুঝে দামও আয়ত্তের মধ্যে রাখা হয়েছে। জলভরা সন্দেশ, বাটি সন্দেশ, মালাই প্যাটিস, কাজু বরফি সন্দেশ প্রভৃতি অনেক নতুন মিষ্টি তৈরি করা হয়েছে। সেলসম্যানের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে।