• ভাইফোঁটায় সব্জি, মাছ-মাংস দামি, পকেটে টান মধ্যবিত্তের
    বর্তমান | ০৩ নভেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: রবিবার ভাইফোঁটা। ভাইয়ের কপালে ফোঁটা দেওয়ার পর তাঁর হাতে মিষ্টি ও পছন্দের খাবার তুলে দেবেন দিনি-বোনেরা। তাই ভাইফোঁটার স্পেশাল মেনুর জন্য রবিবার থেকেই শুরু হল কেনাকাটা। কিন্তু ভাইফোঁটার ভুড়িভোজের আয়োজনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে সব্জি ও মাছ-মাংসের অগ্নিমূল্য। হাতে ছ্যাঁকা লাগার মতো দাম ফলের বাজারেও। যাঁরা লক্ষ্মীপুজোর পর বাজারদর কিছুটা কমার আশা করেছিলেন, তাঁরা এখন হতাশ। চড়া দামে কেনাকাটা করে ভাইফোঁটা আয়োজনে মধ্যবিত্তের পকেটে টান পড়েছে।

    শনিবার কৃষ্ণনগরের পাত্রবাজারে এসেছিলেন মৃণালিনী পাত্র। তিনি বলেন, ভাই বিদেশে থাকে। কালীপুজোর জন্য বাড়ি ফিরেছে। ভাইফোঁটার পর আবার বিদেশে ফিরে যাবে। ভেবেছিলাম, ভাইকে এবার ইলিশ খাওয়াব। কিন্তু যা দাম, তাতে কেনা সম্ভব নয়। অন্য কিছু কিনতে হবে।

    মৃণালিনীদেবীর মতো অনেকেরই ভাইফোঁটার দুপুরের মেনুতে ইলিশ প্রথম পছন্দ। কিন্তু এখন ইলিশ কেনা আর সোনা কেনা একই ব্যাপার। মাছবাজারে ঢুকে মুখ ব্যাজার করে এমনটাই বলছেন অনেক ক্রেতা। কৃষ্ণনগরে এক কেজি স্বাদযুক্ত বড় ইলিশ মাছের দাম ২৫০০ টাকায় পৌঁছে গিয়েছে। তার চেয়ে ছোট সাইজের ইলিশ বিকিয়েছে ১৩০০-১৫০০ টাকা কেজি দরে। তাই অনেকেই ইলিশ মেনু থেকে বাদ দিয়েছেন। জেলার অন্য শহরেও দাম একইরকম।

    কৃষ্ণনগরের মাছ বিক্রেতা তন্ময় দফাদার বলেন, মাছের পাইকারি দাম বেশি। তাই আমাদেরও চড়া দামে মাছ বিক্রি করতে হচ্ছে। অনেকেই দাম জিজ্ঞাসা করে চলে যাচ্ছেন। কাতলা মাছ ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। শনিবার নদীয়া জেলায় মুরগির মাংসের দাম কেজি প্রতি ২৫০ টাকায় পৌঁছে যায়।‌ খাসির মাংস ৮০০-৮৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।

    সব্জি ব্যবসায়ীরা জানালেন, শনিবার কৃষ্ণনগরের বাজারে ভিড় থাকলেও কেনাকাটা খুবই মেপে মেপে চলছিল। এদিন ১০০ টাকা কেজির নীচে বেগুন প্রায় পাওয়াই যায়নি। কোথাও কোথাও ৮০ টাকা কেজিতে পাওয়া খেলেও তার গুণমান খারাপ ছিল। টম্যাটো বিক্রি হচ্ছিল ১৫০ টাকা কেজি দরে। বেলার দিকে এক কেজি পটলের দাম সামান্য কমে ৩০টাকা হয়েছিল। পেঁয়াজের দামে কোনও হেরফের হয়নি। জেলাজুড়ে তা ৭০-৭৫ টাকা কিলো দরেই বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি আলুর দাম ছিল কমপক্ষে ৩৫টাকা। লাল শাক ও গাজর ৮০ টাকা কিলো দরে বিক্রি হয়েছে। এক কিলো লঙ্কার দামও ১৫০ টাকা ছুঁয়েছে। ঢ্যাঁড়শ ৫০ টাকা কিলো, করলা ৮০ টাকা কিলো, রসুন ৩৫০ টাকা কিলো দরে বিক্রি হয়েছে। 

    এদিন কৃষ্ণনগর সহ নদীয়ার বিভিন্ন বাজারে ফলের দাম ছিল আকাশছোঁয়া। কেজি প্রতি শশা ও পানিফল ৪০, ন্যাসপাতি ১২০, পেয়ারা ৬০-৬৫, ভালো আপেল ১২০-১৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। সব্জি ব্যবসায়ী তাপস সর্দার বলেন, আবহাওয়ার কারণে সব্জির সরবরাহ কম। তবে দুর্গাপুজোর আগের সময়ের তুলনায় একটু দাম 

    কমেছে।
  • Link to this news (বর্তমান)