আরামবাগের রামকৃষ্ণ ও বলরামপুর সেতু দু’টির স্বাস্থ্য পরীক্ষার সিদ্ধান্ত পূর্ত দপ্তরের
বর্তমান | ০৩ নভেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: আরামবাগের দীর্ঘদিনের প্রাচীন রামকৃষ্ণ ও বলরামপুর সেতুর হাল কেমন? মাঝেমাঝেই বেহাল হয়ে পড়ে সেতু দু’টির একাংশ। তাই দু’টি সেতুরই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর সিদ্ধান্ত নিল পূর্তদপ্তর। শীঘ্রই বিশেষজ্ঞরা দু’টি সেতুর স্বাস্থ্য খতিয়ে দেখবেন। আরামবাগে রামকৃষ্ণ সেতু দ্বারকেশ্বর নদের উপরে তৈরি হয়। এছাড়া বলরামপুর সেতু নির্মিত হয়েছে কানা দ্বারকেশ্বর খালের উপর। রামকৃষ্ণ সেতু আরামবাগের সঙ্গে সংযোগ করেছে বাঁকুড়া ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাকে। অন্যদিকে, বলরামপুর খালের সংযোগ রয়েছে আরামবাগ থেকে কলকাতা যাওয়ার রাস্তায়।
পূর্ত দপ্তরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার সুমন্ত প্রামাণিক বলেন, দু’টি সেতু সবসময় আমাদের নজরদারির মধ্যে রয়েছে। বিভিন্ন সময় মেরামতির কাজ করা হয়। কিন্তু রামকৃষ্ণ ও বলরামপুর সেতুর বয়স প্রায় ৬০ বছর হতে চলল। ফলে সেতুর ভারবহন ক্ষমতা কতটা রয়েছে অথবা সেখানে কী ধরনের মেরামতির প্রয়োজন, তা জানা উচিত। তাই সুরক্ষার স্বার্থে দু’টি সেতুরই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হবে। রাজ্য থেকে উচ্চ পর্যায়ের বিশেষজ্ঞ দল প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ নিয়ে এসে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবে। যদিও এটি আমাদের রুটিন কাজ।
পূর্তদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, দক্ষিণবঙ্গের অন্যতম অর্থনৈতিক করিডর আরামবাগ। এখানে থেকে অনায়াসে বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, বর্ধমান, কলকাতা যাওয়া যায়। তারফলে সব সময় যান চলাচলে ব্যস্ত থাকে আরামবাগের রামকৃষ্ণ ও বলরামপুর সেতু। এছাড়া অতিবৃষ্টির ফলে বিপুল জলের চাপও ফি বছর সহ্য করে এই দু’টি সেতুর স্তম্ভগুলি। বিগত দিনের তুলনায় বর্তমানে এই দু’টি সেতুর উপর যান চলাচলের সংখ্যা বেড়েছে। নিত্যদিন কয়েক হাজার ভারী যানও চলে। তারফলে বিভিন্ন সময় সেতুর নানা অংশ বেহাল হয়ে পড়ে। পূর্তদপ্তর অবশ্য তা সংস্কারের কাজও করে থাকে। কিন্তু দীর্ঘদিনের প্রাচীন এই দু’টি সেতুর বর্তমান স্বাস্থ্য কেমন, তা জানতে পরীক্ষা করানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে পূর্তদপ্তরে।
পূর্তদপ্তর সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, সেতু দু’টির বাইরে দেখে যা মেরামতির প্রয়োজন, তা নিয়মিত করা হয়। কিন্তু ২০১৯-২০ আর্থিক বর্ষে শেষবারের মতো সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়েছিল পূর্তদপ্তর। বর্তমানে সেতুর স্বাস্থ্যে কোনও ত্রুটি রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে। এরজন্য ব্যবহার করা হবে ইনসপেকশন ভ্যান। স্বাস্থ্য পরীক্ষার সময় রাস্তার একটি লেনে যান চলাচল বন্ধও রাখা হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে পূর্ত দপ্তর।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, এবারও বন্যা পরিস্থিতির সময় নদীর জলস্তর চরম বিপদসীমা অতিক্রম করে উপচে যায়। ফলে ব্যাপক জলের ধাক্কা সামলেছে সেতুর স্তম্ভগুলি। তাই মানুষের সুরক্ষার স্বার্থে সেতুর বর্তমান স্বাস্থ্য খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।