নিজস্ব প্রতিনিধি, রায়গঞ্জ ও সংবাদদাতা পতিরাম ও মালদহ: স্বাস্থ্য সচেতনতায় নতুন প্রজন্মের মনে মিষ্টি নিয়ে নানা বাছবিচার। কিন্তু ভাইফোঁটায় পাতে নিত্যনতুন মিষ্টি তুলে দিতে দোকানে দোকানে ভিড় দিদি, বোনেদের। রায়গঞ্জের প্রদীপ সন্দেশ, মাওয়া রোল থেকে শুরু করে গঙ্গারামপুরের ক্ষীর দই সহ শতাধিক রকমের মিষ্টির চাহিদা আকাশছোঁয়া। উত্তর দিনাজপুর, মালদহ, দক্ষিণ দিনাজপুরের সব মিষ্টির দোকানেই শনিবার উপচে পড়ল ভিড়।
রায়গঞ্জ শহর ও সংলগ্ন এলাকার মিষ্টির দোকানে এবারই প্রথম বিক্রি হল প্রদীপ সন্দেশ, মধুচপ, মাওয়ারোল। পাল্লা দিয়ে বিক্রি হয়েছে গঙ্গারামপুরের ক্ষীর দইয়ের হাজার হাজার হাঁড়ি। কর্ণজোড়ার একটি নামি মিষ্টির দোকানের কর্ণধার প্রিয়াংশু ঘোষের কথায়, চিনির মাত্রা কম, এমন মিষ্টির চাহিদাই এখন বেশি। সে কথা মাথায় রেখে মিষ্টির পরিমাণ কমিয়ে ক্ষীর দিয়ে একটি প্রদীপ তৈরি করেছেন তাঁরা। যেটির মাঝে টইটম্বুর হয়ে রয়েছে মধু। আবার মাওয়া রোলের ক্ষেত্রে ভিতরে মিষ্টি, উপরে পুরু ক্ষীরের আস্তরণ। পরবর্তীতে সেটা ফ্রাই করা হয়। তারপর একবারে এগরোলের মতো মুড়ে দেওয়া হচ্ছে কাগজ দিয়ে। ক্রেতাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে এটাও অত্যন্ত কম মিষ্টি দিয়ে বানানো হয়েছে। এছাড়া মধুচপ, পাঞ্জাবি পেরা, সবেদা ফালির মতো মিষ্টি রয়েছে। রায়গঞ্জ শহরের বিদ্রোহী মোড় লাগোয়া পুরোনো একটি মিষ্টির দোকানের কর্ণধার নিতাই দত্ত বললেন, রকমারি সন্দেশ, রসগোল্লার পাশাপাশি গঙ্গারামপুর থেকে আনানো ক্ষীর দই, মিষ্টি দইয়ের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ভাইফোঁটা উপলক্ষ্যে ক্রেতারা অন্তত এক কেজির দইয়ের হাঁড়ি নিয়ে যাচ্ছেন।
কার্যত একই চিত্র দক্ষিণ দিনাজপুরে বালুরঘাট শহরেও। সেখানে দেদার বিকোচ্ছে ভাইফোঁটা স্পেশাল ক্ষীরের সন্দেশ। সঙ্গে মিলছে ম্যাঙ্গো, ভ্যানিলা, স্ট্রবেরি ফ্লেভারসহ রকমারি প্রায় ৬০ ধরনের মিষ্টি। কেউ বানাচ্ছেন স্পেশাল রাজভোগ, পদ্ম মিষ্টি, আবার অনেকে গাজর, টমেটো ও বিভিন্ন সব্জি আকৃতির মিষ্টি তৈরি করেছেন।
দোকানগুলিতে এদিন কারিগরদের ব্যস্ততা ছিল তুঙ্গে। শহরের মানুষের মিষ্টির জোগান দিতে তাঁরা শনিবার রাতভর কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন। শহরের চৌরঙ্গী এলাকার একটি দোকানের মালিক সৌরভ দাস বললেন, আমরা প্রায় ৬০ রকমের মিষ্টি তৈরি রেখেছি।
ভাইফোঁটা উপলক্ষ্যে মালদহে মিষ্টির দোকানগুলিতে শনিবার লম্বা লাইন দেখা গিয়েছে। এদিন প্রতিপদে কোনও কোনও পরিবারে ভাইফোঁটা হয়েছে। তবে বেশির ভাগ বাড়িতেই আয়োজন হবে রবিবার। মালদহের বিখ্যাত কানসাটের চমচম এবং রসকদম্ব অবশ্য বিক্রিতে পিছনে ফেলে দিয়েছে অন্যান্য মিষ্টিকে। আনন্দভোগ, মালাই চমচম বিক্রি হয়েছে ২০ টাকা করে। আনারস বরফি, পাটিসাপটা একি পিসের দাম ছিল ১০ টাকা। সঙ্গে কাঁঠালি মিষ্টি, ম্যাঙ্গো রসগোল্লা, গোলাপজাম, কালাকাঁদ ও অন্যান্য মিষ্টিরও যথেষ্ট চাহিদা ছিল।