নিজস্ব প্রতিনিধি ও সংবাদদাতা: আজ, রবিবার ভাইফোঁটা। মিষ্টির দোকানে দোকানে নতুন মিস্টি তৈরির প্রতিযোগিতা। কোথাও বেলজিয়াম মিষ্টি, কোথাও বাটার স্কচ, কোথাও বা ক্ষীর পায়েস, দুধ মালাই। উত্তরবঙ্গের প্রতিটি জেলায় শনিবার সকাল থেকেই মিষ্টি, জামাকাপড় ও উপহার সামগ্রীর দোকানে ভিড় উপচে পড়ল। সব্জির বাজারেও জিনিসের দাম ছিল চড়া।
শিলিগুড়িতে বাঙালির উৎসবে বাঙালির মিষ্টি লেডিকেনি, রাজভোগ, পান্তুয়া, চমচম অনেকদিন আগেই জনপ্রিয়তা হারিয়েছে। রসগোল্লা টিকে থাকলেও বাকি মিষ্টির জায়গা নিয়েছে ভিনরাজ্যের বাসিন্দাদের পছন্দের মিষ্টি। তাই সারা বছর রং বেরঙের ক্ষীর, ছানার মিষ্টি এখন পাড়ার দোকানগুলিও তৈরি করছে। সেসব মিষ্টিতে ভাইফোঁটা লিখে বিক্রেতারা ক্রেতা ধরতে চাইছেন। শিলিগুড়ির এক পুরনো মিষ্টি বিক্রেতা বিমল ঘোষ বলেন, সারা বছর সাধারণ মানুষের যেসব মিষ্টির চাহিদা থাকে তা তৈরি করতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাই এখন আর ভইফোঁটা স্পেশাল মিষ্টি তৈরির কথা সেভাবে ভাবা হয় না।
এদিকে, জলপাইগুড়ি মাতাচ্ছে মালাই আঙ্গুরি, বাটার স্কচ চপ, বেলজিয়াম চকোলেট বল, স্ট্রবেরি চকোলেট কাজু বরফি বা ক্যারামেল নাট বরফির মতো অভিনব মিষ্টি। ভাইফোঁটা স্পেশাল হিসেবে এগুলি ভালো বিক্রি হচ্ছে বলে বিক্রেতারা জানিয়েছেন। শনিবার জলপাইগুড়ি শহরের মিষ্টির দোকানগুলিতে ভিড় উপচে পড়ে। এক মিষ্টির দোকানের মালিক সুব্রত ঘোষ বলেন, খোয়া ক্ষীরের সঙ্গে বেলজিয়াম চকোলেট বল দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও রাবরির সঙ্গে স্যাফরন ও আঙুরদানা রসগোল্লার ফিউশনে তৈরি করা হয়েছে মালাই আঙ্গুরি। অন্যদিকে, শহরের আর একটি দোকানে বিক্রি হচ্ছে লিচু পোস্তা। এই মিষ্টি দেখতে হুবহু পাকা লিচুর মতো। বাইরের অংশে পুরোটাই পোস্ত। কাজু বাদামের সঙ্গে ক্যারামেল মিশিয়ে তৈরি করা হয়েছে ক্যারামেল নাট বরফি।
কোচবিহারেও মিষ্টির দোকানগুলিও রকমারি মিষ্টি বানাতে শুরু করেছে। তবে এবার প্রথাগত মিষ্টির উপরেই ক্রেতাদের বেশি ঝোঁক থাকবে বলে ব্যবসায়ীদের দাবি। তাই রসগোল্লা, সন্দেশ তো থাকছেই। সেই সঙ্গে দুধ চমচম, দুধ মালাইকারির মতো মিষ্টির উপরে জোড় দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও চমচম, ক্ষীর পায়েস, মিহিদানা, সীতাভোগ, ভাইফোঁটা লেখা সন্দেশ সহ আরও নানা ধরনের মিষ্টি বানানো হচ্ছে। তুফানগঞ্জের ব্যবসায়ীরাও তৈরি করেছেন শাহি রসগোল্লা ও আমদই।
আলিপুরদুয়ারেও এদিন থেকে মিষ্টির দোকানে ভিড় শুরু হয়েছে। এদিন প্রতিপদেও অনেকেই ভাইফোঁটা পালন করেন। তবে আজ, রবিবার দ্বিতীয়াতে ভাইঁফোটার প্রধান দিন। বোনকে বিশেষ উপহার দিতে শনিবার শহরের দোকানগুলিতে ভিড় উপচে পড়ে। জামাকাপড়ের দোকানগুলিতে দেদার কেনাকাটা চোখে পড়েছে।
এদিকে, জলপাইগুড়ির কোরক হোমে এবারও ভাইফোঁটার আয়োজন করা হয়েছে। কোচবিহার ও জলপাইগুড়ির দু’টি হোম থেকে বোন-দিদিরা ফোঁটা দিতে আসবে কোরকের ছেলেদের। এউপলক্ষ্যে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়েছে কোরক হোমে।