মুণ্ডহীন দেহের পরিচয় মিলল, নরবলির তত্ত্বে জোর পরিবারের
বর্তমান | ০৩ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, পুরাতন মালদহ: গাজোলে মুণ্ডহীন দেহ উদ্ধার হওয়ার ঘটনায় পরিচয় উদ্ধার করল পুলিস। মৃত কৃষ্টপদ রায়ের (৬৫) বাড়ি গঙ্গারামপুর থানার বেলবাড়ি এলাকায়। পরিবারের সদস্যদের দাবি, কালীপুজোয় বলি দেওয়া হয়েছে তাঁকে। পরিবার ও পুলিস স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রৌঢ় সামান্য মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। দীর্ঘদিন কোনও কাজ করতেন না। মাঝেমধ্যে নিজের বাড়ি ছেড়ে ঘুরে বেড়াতেন বিভিন্ন জায়গায়। কিন্তু বুধবার গভীর রাতের পর তাঁর আর খোঁজ পাননি বাড়ির লোকরা। শুক্রবার রাতে পরিবারের সদস্যরা সামাজিক মাধ্যমে কৃষ্টপদর মৃত্যুর খবর পান। শনিবার সকাল হতেই তাঁরা কয়েকজন গাজোল থানায় ছুটে আসেন।
তাঁদের দাবি, এখানে এসে দুর্ঘটনার কথা শুনছেন। সেরকম হলে মাথা থেঁতলে যাবে, এমনভাবে কাটা যাবে না। মৃতের আত্মীয় নন্দন রায় বলেন, আমাদের বাড়ি গঙ্গারামপুরের বেলবাড়িতে। দুর্ঘটনা হলে মাথা থেঁতলে যেত। ওই রাতে অমাবস্যা ছিল। যেভাবে মাথা কাটা রয়েছে, মনে হচ্ছে বলি দেওয়া হয়েছে। উপযুক্ত তদন্ত হোক। স্থানীয়দের একাংশ মনে করছেন, তান্ত্রিকরা কৃষ্টকে বলি দেওয়ার পর তাদের কাজ সেরে দেহ সড়কে রেখে গিয়েছিল। ধৃত যুবকদের গাড়ি সেটিতে ধাক্কা মারলে মুণ্ড ছিটকে যায়।
গাজোলের ৫১২ নম্বর জাতীয় সড়ক সোজা বালুরঘাট যায়। দেওতলা হিয়াখোর এলাকায় সেই সড়কের ধারে জঙ্গলে শুক্রবার এক ব্যক্তির ধড় উদ্ধার হয়। তার ৫০ মিটার দূরে পাওয়া যায় মুণ্ড। একই দিনে ওই গ্রামের দেড় কিমি দূরে একটি দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ি উদ্ধার হয়। ফলে কৃষ্টর মৃত্যু দুর্ঘটনায় হয়েছিল বলে মনে করছিল পুলিস। গাড়িটি গাজোলের কংগ্রেস নেত্রী শেফালি সরকারের বলে জানা গিয়েছে। সেই দুর্ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। ধৃতদের নাম আব্দুল ফারুক, অসিত চৌধুরী, সৌম্যজিৎ সরকার। তাদের বয়স ২২ থেকে ২৮ এর মধ্যে। বাড়ি গাজোলের বিভিন্ন এলাকায়। ধৃতদের মধ্যে ফারুক ওই দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ির চালক বলে পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে। ধৃতদের পাঁচদিনের পুলিস হেফাজত হয়েছে। অভিযুক্তরা মদ খেয়ে সেদিন গাড়ি চালাচ্ছিল বলে জেলা পুলিস শনিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়েছে।
গাড়ির মালিক শেফালি বলেন, ফারুক আমার গাড়িচালক। শুনেছি সে গ্রেপ্তার হয়েছে। তারা আমাকে বলেছিল, কালভার্টে গাড়ির ধাক্কা লেগেছিল। দেহ উদ্ধারের সঙ্গে তারা যুক্ত নয়। তদন্ত হলে সব উঠে আসবে।
গাজোল থানার এক আধিকারিক বলেন, মৃতের পরিবার কী বলেছে জানি না। তদন্ত শেষ না হলে কিছু বলা যাবে না। দুর্ঘটনার সঙ্গে দেহ উদ্ধারের ঘটনার যোগ থাকার কিছু সূত্র আমরা পেয়েছি। সেজন্য তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।