ত্রিপলের নীচে দিন কাটছে ভাঙন এলাকার বহু মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর
বর্তমান | ০৩ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, মানিকচক: মাধ্যমিক পরীক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভাঙন কবলিত এলাকার পরীক্ষার্থীরা। বর্ষায় নিজেদের ভিটেমাটি নদীগর্ভে তলিয়ে যাওয়ার দৃশ্য এখনও ভোলেনি তারা। গোপালপুরে ত্রিপলের নীচে দিন কাটছে বহু দুর্গত পরিবারের। সেই পরিবারগুলিতে রয়েছে বহু মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। স্থায়ী ঘর না থাকায় পরীক্ষার আগে পড়াশোনা ঠিকমতো করতে পারছে না আসিফা মফিজুল, মোবারক মোমিনের মতো বহু পরীক্ষার্থী।
গত কয়েকমাসে প্রবল নদী ভাঙনের সাক্ষী ছিল মানিকচকের গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তিনটি গ্রাম। ভিটেমাটি থেকে চাষাবাদের জমি- সব তলিয়ে গিয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে বাড়ির আসবাবপত্র নিয়ে অনেকে ঠাঁই নিয়েছেন অন্যের আম বাগানে বা বাঁধের ধারে। ত্রিপলের নীচে চলছে তাদের জীবনযাপন।
সেই ত্রিপলের নীচেই দেখা যাচ্ছে বহু মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে। তাদের হাতে আর মাত্র তিন মাস। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে শুরু হবে মাধ্যমিক পরীক্ষা। অন্য ছাত্রছাত্রীরা জোরকদমে পড়াশোনা চালিয়ে গেলেও ভাঙন কবলিত কামালতিপুর, উত্তর ও দক্ষিণ হুকুমতটোলার মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা দুশ্চিন্তায়। একটি মাত্র ত্রিপলের নীচেই চলছে একটি পরিবারের রান্না, থাকা, খাওয়া, ঘুমানো। ফলে পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটছে পরীক্ষার্থীদের।
এবার মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে মফিজুল মোমিন। ছয়বছর আগে তার বাবা গত হয়েছেড়। বিধবা মা এবং এক প্রতিবন্ধী দাদাকে নিয়ে ত্রিপলের নীচে দিন কাটছে মফিজুলের?
আরেক পরীক্ষার্থী আসিফা খাতুনের পরিবারও ভিটেমাটি ছাড়া। নদীর ধারে ত্রীপলের নীচে বসবাস আরও বেশকিছু মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর। তারা প্রত্যেকেই গোপালপুর হাইস্কুল ও খাসখল উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী। মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী আসিফা জানায়, পড়তে বসলেও ভাঙনের ভয় মন থেকে বের হচ্ছে না। জানি না কীভাবে পরীক্ষা দেব। গোপালপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সমীরেন্দু নারায়ণ মল্লিক বলেন, স্কুলে প্রায় ২২২ জন এবার মাধ্যমিক দেবে। তাদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি ভাঙন কবলিত। পরিবার নিয়ে কোনওরকমে ত্রিপলের নীচে তাদের দিন কাটছে। জীবনের প্রথম বোর্ড পরীক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তায় স্কুল কর্তৃপক্ষও। গোপালপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষকের কথায়, বর্তমানে স্কুল বন্ধ। স্কুল খুললে তাদের জন্য স্পেশাল ক্লাসের ব্যবস্থা করা হবে।