সংবাদদাতা, ফালাকাটা: সাত বছর আগের নবমীর রাতের আঁধার যেন ফিরে এল কালীপুজোর পরের দিন। যাকে কেন্দ্র করে ফাঁসির দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠল এলাকা।
ফালাকাটা ব্লকের ধনীরামপুর-২ অঞ্চলে আট বছরের শিশুকন্যাকে নবমীর রাতে ধর্ষণ করে খুন করা হয়। দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হলে তিনমাস পর একজন জামিনে ছাড়া পায়। তবে সেই ঘটনার সাত বছর কেটে গেলেও বিচার মেলেনি বলে অভিযোগ পরিবার সহ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
এদিকে, গত শুক্রবার বিকেলে খগেনহাটে ছ’বছরের শিশুকন্যাকে ধর্ষণ ও খুন করে পুকুরে ফেলে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করছিল অভিযুক্ত। সেই সময় মোনা রায় (৪৫) নামে এক অভিযুক্তকে হাতেনাতে ধরে ফেলে জনতা। তারা অভিযুক্তকে সুপারি গাছে বেঁধে গণপিটুনি দেয়। পরে পুলিস মোনাকে উদ্ধার করে ফালাকাটা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত বলে জানান। বাসিন্দাদের দাবি, ঘটনার আগে দুই অভিযুক্ত মোনা ও মনোরঞ্জন রায় ওরফে ভক্ত একসঙ্গে বসে মদ্যপান করে। তবে মোনা জনতার হাতে ধরা পড়তেই ভক্ত পালিয়ে যায়। পরে পুলিস তার মোবাইল লোকেশন ট্র্যাক করে হাসিমারা থেকে গ্রেপ্তার করে।
সেই ধৃতের ফাঁসির দাবিতে শনিবার দিনভর দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়ে উঠে ফালাকাটা ব্লকের গদিখান মোড়। এদিন সকালে প্রথমে এলাকায় মিছিল ও পরে টায়ার জ্বালিয়ে সকাল ১১টা থেকে দফায় দফায় পথ অবরোধ করে বিক্ষোভে শামিল হন বাসিন্দারা। অবরোধ তুলতে ঘটনাস্থলে পৌঁছন ফালাকাটা থানার আইসি সমিত তালুকদার এবং বিডিও অনীক রায়। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বিকেলে বিশাল পুলিস বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে যান জয়গাঁর অতিরিক্ত পুলিস সুপার মানবেন্দ্র দেবনাথ। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত অবরোধের জেরে জটেশ্বর-খগেনহাট, খগেনহাট-বীরপাড়া সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে।
এদিকে, শিশুকন্যাকে নৃশংস খুনের প্রতিবাদ জানিয়ে এদিন গদিখানা মোড়ের সমস্ত দোকান বন্ধ রাখেন ব্যবসায়ীরা। সন্ধ্যার পর শিশুর মৃতদেহ এলাকায় পৌঁছতেই চারদিকে কান্নার রোল পড়ে।
ফালাকাটার বিডিও অনীক রায় বলেন, একজন গণপিটুনির জেরে মারা গিয়েছে। আরেক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিস আদালতে পাঠিয়েছে। আইন আইনের পথে চলবে। ফালাকাটা থানার আইসি সমিত তালুকদার বলেন, অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়েছে। অপর অভিযুক্তকে এদিন আদালত ১০ দিনের পুলিস হেফাজতে পাঠিয়েছে। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু হয়েছে।