তন্ময়-কাণ্ডের প্রভাবে সিপিএম আরও তলিয়ে যাবে ভোটবাক্সে?
বর্তমান | ০৩ নভেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আর জি কর কাণ্ডে ‘নাগরিক’ আর ‘জুনিয়র ডাক্তার’দের কাঁধে চেপে সিপিএম ভাবছে ‘ভোটবাক্সে বিপ্লব’ হলেও হতে পারে। এরই মধ্যে এল উপনির্বাচন। ৬টি আসনের মাত্র একটি তালডাংড়ায় প্রার্থী দিয়েছে কাস্তে-হাতুড়ি। এই আবহে আচমকা ধাক্কা আলিমুদ্দিনে। উত্তর ২৪ পরগনার সিপিএম নেতৃত্ব তন্ময় ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে মহিলাকে হেনস্তার অভিযোগ উঠল। ঘটনা গড়াল পুলিস পর্যন্ত। এই অভিযোগের প্রভাব আসন্ন নৈহাটি উপনির্বাচনে পড়তে পারে বলে মনে করছেন একাংশের বাম কর্মী-সমর্থকরা। এই কেন্দ্রে বৃহত্তর বাম জোটের ছত্রছায়ায় সিপিআই(এমএল) লিবারেশন প্রার্থী দিয়েছে। প্রশ্ন থাকছে, প্রভাব কি বাকি আসনেও পড়বে?
যদিও আলিমুদ্দিনের নেতারা এমন তত্ত্ব মানতে নারাজ। তাঁরা বলছেন, অভিযোগ আসার সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নিয়েছে পার্টি। অভ্যন্তরীণ তদন্তও শুরু হয়েছে। এদিকে আর জি কর কাণ্ড থেকে কোনোভাবেই সরতে চাইছে না সিপিএম। দীপাবলি উপলক্ষ্যে বইয়ের স্টলের নাম দেওয়া হয়েছে ‘দ্রোহকালের বইঘর’। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, আর জি কর কাণ্ডের প্রভাব হয়তো গ্রামে খুব একটা পড়েনি। কিন্তু নৈহাটিতে কি খানিক হলেও পড়বে? সেই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। শাসক দল তৃণমূলও তন্ময় ভট্টাচার্যের বিষয়টি নিয়ে জমি ছাড়তে রাজি নয়। স্থানীয় এলাকায় মিছিল করেছে তৃণমূল। নৈহাটির লিবারেশন প্রার্থী দেবজ্যোতি মজুমদার বলছিলেন, ‘এই ঘটনা দুঃখজনক। তবে এর কোনও প্রভাব ভোটে পড়বে না। নেগেটিভ বিষয় নিয়ে কেউ প্রচার করতেই পারে। তন্ময়বাবু যা করেছেন, তাঁর দল সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকশনও নিয়েছে। কমিউনিস্ট পার্টিগুলোর নীতি এই বিষয়ে জিরো টলারেন্স।’ লিবারেশনের সুরেই কথা বলেছেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পলাশ দাস। তিনি বলেন, ‘আর জি কর কাণ্ডে বামপন্থীদের অগ্রণী অবস্থান কোনোভাবেই ব্যাকফুটে যাবে না। পার্টির সিদ্ধান্ত সকলেই জানেন। আমাদের দেশে আর কোনও পার্টিই এই ব্যবস্থা নিতে পারে না। সরকারি সংস্থাগুলোও পারে না। কাজেই সিপিএম সম্পর্কে মানুষের ধারণা আরও ভালো হবে।’
কিন্তু তন্ময়বাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ আসার পর খোদ রাজ্য কমিটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে ছিল, এতে পার্টির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে। সেই ক্ষুণ্ণ ভাবমূর্তি উপনির্বাচনে লালপার্টিকে আরও তলিয়ে দেয় কি না এখন সেটাই দেখার।