বোনের কাছে রেখে না গেলে মেয়েকে আর হারাতে হতো না, আক্ষেপ মায়ের
বর্তমান | ০৩ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, উলুবেড়িয়া: আমার টোটো পুরসভার মাঠে পুলিস আটকে রেখেছে, তুমি একবার এস। শুক্রবার বিকেলে স্বামীর কাছ থেকে এই ফোন পাওয়ার পরেই নিজের মেয়ে মুমতাহিনা খাতুনকে (৫) উলুবেড়িয়া গঙ্গারামপুরে একটি বাড়িতে বোন মনীষা খাতুনের কাছে রেখে যান তুহিনা বেগম। বোন ওই বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করেন। কিন্তু তারপরই বাড়িটির বেসমেন্টে আগুন লেগে আরও দু’জনের সঙ্গে মৃত্যু হয় মুমতাহিনারও। মেয়ের এভাবে মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না উলুবেড়িয়ার ১৯ নং ওয়ার্ডের বাড় বাঙালপুরের বাসিন্দা তুহিনা বেগম।
শুক্রবার সন্ধ্যায় মেয়ের এই পরিণতির পর থেকেই কেঁদে চলেছেন তিনি। শনিবার সকালেও বাড় বাঙালপুরে তাঁর বাড়ি থেকে সমানে ভেসে আসছিল কান্নার রোল। বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, চারদিকে প্রতিবেশীদের ভিড়। একটি ঘরে মেয়ের মৃতদেহের জন্য অপেক্ষা করছেন তুহিনা। তাঁকে ঘিরে আছেন প্রতিবেশীরা। স্বামী মেহেরাজ মল্লিক মেয়ের মৃতদেহ আনতে উলুবেড়িয়া মেডিক্যাল কলেজে গিয়েছেন।
তুহিনা জানান, স্বামী টোটো চালান। শুক্রবার বিকেলে রাস্তার পাশে টোটো দাঁড় করিয়ে মিষ্টির দোকানে যাওয়ায় পুলিস ওঁর টোটোকে আটক করে। স্বামীর কাছ থেকে এই ফোন পাওয়ার পরেই মেয়েকে নিয়ে উলুবেড়িয়া পুরসভায় যাওয়ার জন্য বেরিয়ে পড়ি। পথে গঙ্গারামপুরে রাস্তার পাশের ওই বাড়িতে বোন মনীষা কাজ করে। বোনের কাছে মেয়েকে রেখে পুরসভায় চলে যাই। পরে ফোনে আমাকে জানানো হয়, ওই বাড়িতে আগুন লেগেছে। আর তারপরেই এসে দেখি সব শেষ।
এর আগেও মেয়েকে ওই বাড়িতে রেখে গিয়েছি। কিন্ত শুক্রবারের রাখা যে শেষ রাখা হবে, তা ভাবতে পারেনি। মেয়েকে ওখানে না রেখে যদি সঙ্গে করে নিয়ে যেতাম, তাহলে তাকে এভাবে হারাতে হতো না। কাঁদতে কাঁদতে আক্ষেপ করেই চলেছেন তুহিনা।