দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুর ২ ব্লকের কুমড়োপাড়া পঞ্চায়েতের পুরকাইতঘেরি গ্রামে আবাসের তালিকা টাঙানো নিয়ে শুক্রবার রাতে মারপিটে জড়াল দু’পক্ষ। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি আবাসের নামের তালিকা ব্লক প্রশাসন থেকে সংগ্রহ করে গ্রামের মুখে বড় ফ্লেক্স করে টাঙিয়ে দেন এক নির্দল সদস্য। অভিযোগ, তাতে সিভিক ভলান্টিয়ার, তৃণমূল ঘনিষ্ঠ কর্মী-সমর্থকদের নাম রয়েছে, যাঁদের পাকা বাড়ি আছে।অভিযোগ, স্থানীয় এক তৃণমূল নেতার নেতৃত্বে ওই তালিকা ছিঁড়ে ফেলার চেষ্টা হয়। সে নিয়ে পুলিশের সামনেই আইএসএফ এবং নির্দল সমর্থকদের সঙ্গে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের হাতাহাতি বাধে। কয়েক জন জখম হন। পুলিশ জানায়, অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এক নির্দল সমর্থককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়ায় খিদিরপুর পঞ্চায়েতের কলোনি এলাকায় শনিবার সমীক্ষা করতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়ে প্রশাসনের দল। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, অনেকে বাঁশ, পাটকাঠির বেড়া, টিনের ছাউনির ঘরে থাকলেও, আবাস তালিকায় নাম ওঠেনি। হরিহরপাড়ার বিডিও ছেরিং জাম ভুটিয়া বলেন, “অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ মুর্শিদাবাদের ফরাক্কার নয়নসুখ অঞ্চলের পারসুজাপুরে আবাসের তালিকা নিয়ে তৃণমূলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বেধেছে। পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য মোস্তফা হোসেনের অভিযোগ, “গ্রামের তৃণমূল নেতা অলিকুল আলমের পরিবারের ৪ জনের নাম রয়েছে তালিকায়।’’অলিকুলের পাল্টা দাবি, “আমাদের কারও পাকা বাড়ি নেই। সবাই আলাদা থাকি। তদন্তে ভুল পেলে প্রশাসন নাম বাদ দেবে।”
নদিয়ার চাপড়ায় ইটভাটার মালিক, একাধিক ট্রাকের মালিক বা বড় মিষ্টির দোকানদারের নাম তালিকায় উঠেছে বলে এলাকাবাসীর একাংশের দাবি। অভিযোগ, সমীক্ষক দল এলে তাঁদের কেউ কেউ বাড়ির অদূরে তৈরি করা কুঁড়েঘর দেখাচ্ছেন। এমন ছদ্ম-দরিদ্রদের চিহ্নিত করা হচ্ছে বলে প্রশাসন জানায়।
মাদারিহাটে বিধানসভা উপনির্বাচনের প্রচারে গিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, ‘‘রাজ্য সরকার দুর্নীতিতে জর্জরিত। আবাস যোজনায় গরিবের নামে ঘর লুট হয়েছে। ভুয়ো তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।’’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, “২০২২-এ তালিকার পরে প্রতিবাদের জেরে সরকার বলল, আমরা সব পরিষ্কার করে দিচ্ছি, ১৭ লক্ষ নাম বাদ। কিন্তু একবারও দেখাল না, কারা এঁদের নাম ঢুকিয়েছিলেন? যে তালিকা পড়ে থাকল, তাতেও দেখা যাচ্ছে, তৃণমূল নেতা, পঞ্চায়েত সদস্য, সিভিক ভলান্টিয়ার, যাঁদের পাকা বাড়ি আছে, তাঁদের নামে ঘরের ব্যবস্থা!’’ তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আবাসের টাকা আটকাতে রাজ্য বিজেপি নেতারাই উদ্যোগী হয়েছিলেন। ভোটে তার ফলও পেয়েছেন। এখন অশান্তি তৈরি করে প্রকল্প আটকাতে চাইছেন। লাভ হবে না।’’