ঢাকুরিয়ার এক বেসরকারি হাসপাতাল সংলগ্ন আবাসনেরবাসিন্দা ওই বৃদ্ধ দম্পতির আত্মীয়ের দাবি, ঘটনাস্থলে পুলিশ ছিল প্রায় ৪৫ মিনিট। তখনকার মতো বন্ধও হয় বাজির তাণ্ডব। কিন্তু অভিযোগ, পুলিশকর্মীরা এলাকা ছাড়তেইফের পুরোদমে তা শুরু হয়। বিকট শব্দে ফাটতে থাকে বাজি। বৃদ্ধ দম্পতি প্রায় অসুস্থ হয়ে পড়ার উপক্রম হওয়ায় ফের লালবাজারে ফোন করা হয়। কিন্তু এ বার সাহায্যের বদলেপুলিশের রোষের মুখে পড়তে হয় তাঁদের। ওই দম্পতির আত্মীয়ের কথায়, ‘‘স্থানীয় লেক থানা থেকে এক আধিকারিক ফোন করেন আমাকে ও প্রবীণ ওই মানুষটিকে। তিনি জানতে চান, বার বার লালবাজারে ফোন করে কেন ব্যস্ত করা হচ্ছে? এমনকি, বাজির তাণ্ডব সহ্য করার পরামর্শ দিয়ে ফোন করতেও বারণ করে দেন তিনি।’’
দীপাবলির রাতে শব্দের তাণ্ডবে শহরবাসীকে অতিষ্ঠ হতে হয়েছিল বলে অভিযোগ। যার রেশ ছিল পরদিন শুক্রবারেও। রাতভরসেই তাণ্ডব চলে বলে অভিযোগ। বেআইনি শব্দবাজির দৌরাত্ম্যেপ্রশ্ন ওঠে, দীপাবলির সন্ধ্যার পর থেকে শহরে আদৌ পুলিশি নজরদারিরয়েছে কি? পুলিশি নজরদারি নিয়ে ওঠা প্রশ্ন যে অমূলক নয়, তা প্রমাণ করে দিয়েছে শুক্রবার রাতে প্রবীণ দম্পতির ওই অভিজ্ঞতা। এ প্রসঙ্গে সবুজ মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক নব দত্তের দাবি, ‘‘পুলিশের একাংশবাজি পোড়ানোকে অপরাধ হিসাবেই গণ্য করে না। বিভিন্ন সময়েআমাদের কাছেও বাজি সংক্রান্ত অভিযোগ আসে। সে সব নিয়ে পুলিশের কাছে গেলে এমন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয় আমাদেরও। সব পুলিশ এক রকম, সেটা বলা হচ্ছে না। তবেএকাংশের গা-ছাড়া মনোভাব বেআইনি বাজির ব্যবহার বন্ধ করতে প্রধান অন্তরায়।’’
এ দিকে বৃহস্পতিবারের পরে শুক্রবার রাত এবং শনিবারেওশব্দ-সন্ত্রাসে অতিষ্ঠ হওয়ার অভিজ্ঞতা হয়েছে শহরের অন্যান্য অংশের বাসিন্দাদের। কসবা, বালিগঞ্জ, বেহালা, পর্ণশ্রী, হরিদেবপুরেরমতো একাধিক এলাকায় গভীর রাত পর্যন্ত শব্দের তাণ্ডব চলে। শনিবারও ইএম বাইপাস সংলগ্ন বহুতলের পাশাপাশি শহরের একাধিকঅংশে বেআইনি শব্দবাজির তাণ্ডব চলেছে। বিসর্জনের শোভাযাত্রা থেকেও বাজি ফাটানো হয়। সঙ্গে যুক্ত হয় ডিজের তাণ্ডব। পুলিশেরসামনে দিয়ে বড় বড় বক্স সাজিয়ে শোভাযাত্রা করতেও দেখা গিয়েছে এ দিন।
যদিও লালবাজার দাবিকরেছে, শব্দবাজির বিরুদ্ধে গত কয়েক দিন ধরে তাদের অভিযান চলছে। এমনকি, গত এক সপ্তাহে চার হাজার কেজির বেশিনিষিদ্ধ বাজি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। চলেছে ধরপাকড়ও। লালবাজারের এক কর্তার কথায়, ‘‘অভিযোগ পেলেই পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে। দীপাবলির আগে থেকেইপুলিশের বিশেষ দল রাস্তায় নজর রাখছে। সারা রাত ধরে অভিযান চলছে। বাজির ক্ষেত্রে আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অন্যান্যবারের মতোই এ বারেও পুলিশ সক্রিয় ছিল।’’