নব্যেন্দু হাজরা: পুজোয় চাই নতুন জামা, নতুন জুতো। অন্তত এমনটাই এতোদিন ভেবে আসতো বঙ্গবাসী। কিন্তু জামা-জুতোর সঙ্গে যদি পুজোয় একটা নতুন গাড়ি হয়, তবে কেমন হয়? বাইক অথবা চারচাকা, সহজ কিস্তিতে যদি ঘরে চলে আসে, তাহলে মন্দ কি? আর সেই ভাবনা থেকেই উৎসবের মরশুমে এবার গাড়ি কেনার হিড়িক সাধারণ মানুষের মধ্যে। পুজোর মাসে দেদার বিকিয়েছে বাইক এবং চার চাকার গাড়ি।
পরিবহণ দপ্তরের হিসেব বলছে, অক্টোবর মানে দুর্গাপুজো, লক্ষ্মীপুজো, কালীপুজোর মাসে রাজ্যে নতুন গাড়ি রেজিস্ট্রেশন হয়েছে, ১ লক্ষ ১৩ হাজার ৭৯টি। গতবছরের তুলনায় যা প্রায় দেড়গুণের কাছাকাছি। গতবছর এই পুজোর মাসেই গাড়ি বিকিয়েছিল ৮১,২১২টি। আর ২০২২ সালে ৫৯,৮৪১টি। অর্থাৎ তথ্য বলছে, দুবছরে গাড়ি বিক্রি প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। সবথেকে বেশি বিকিয়েছে কালীপুজো থেকে ধনতেরাসের মধ্যে। পুজোর সময় প্রতিবছর আরটিও অফিস বন্ধ থাকত। তবে এবার নতুন গাড়ি রেজিস্ট্রেশনের জন্য সমস্ত আরটিও-দের ওয়ার্ক ফর্ম হোম চালু রেখেছিল। ফলে পুজোর দিনগুলোতেও দেদার রেজিস্ট্রেশন হয়েছে দুচাকা চার-চাকার।
পরিবহণ দপ্তরের তথ্য বলছে, ধনতেরাস ও দিওয়ালির সময় মানে ২৯ থেকে ৩১ শে অক্টোবর তিনদিনে সবথেকে বেশি গাড়ি বিকিয়েছে। সংখ্যাটা প্রায় ২১ হাজার। তার মধ্যে অবশ্য বাইকের সংখ্যা বেশি। জানা গিয়েছে, এই তিনদিনে বাইক বিক্রি হয়েছে, ১৭,৮৪৭টি। আর চার চাকার গাড়ি হয়েছে ২১০১টি। তবে এ তো গেল, নতুন গাড়ি রেজিস্ট্রেশনের তথ্য। এর বাইরেও পুরনো গাড়িও হাতবদল হয়েছে কয়েক হাজার।
দপ্তরের এক আধিকারিকের কথায়, ”যত দিন যাচ্ছে, পুজোর সময় মানুষের গাড়ি কেনার আগ্রহও বাড়ছে। এককালীন কিছু টাকা দিয়ে, বাকিটা কিস্তিতে মেটাচ্ছেন মানুষ। গাড়ি কেনার ঝোঁক বেশি নতুন প্রজন্মের কাছে। বেশিরভাগই কর্পোরেটে চাকরি করেন। নিজেরাই গাড়ি চালাতেও পারেন। ফলে তাঁরা সহজেই গাড়ি কিনে নিচ্ছেন। দিওয়ালির তিনদিন পরিবহণ দপ্তরের কোষাগারে রাজস্ব বাবদ এসেছে ৪১,৫৩,৭৪,৩৬৩ টাকা। গাড়ির ডিলারদের কথায়, ”ধনতেরাস বা দীপাবলিতে লোকে সোনা-রূপো কেনার পাশাপাশি এখন গাড়ি কেনার দিকেও ঝুঁকেছেন।”