প্রতি বছরই ভ্রাতৃদ্বিতীয়ায় বাবুন-সহ নিজের পাঁচ ভাইকে ফোঁটা দেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর মোট ছয় ভাইয়ের মধ্যে এক জন প্রয়াত হয়েছেন। তবে এ বার ভ্রাতৃদ্বিতীয়ার আগে বাবুনকে ফোঁটা দেওয়া নিয়ে তৈরি হয়েছিল জল্পনা। কারণ, চলতি বছর লোকসভা ভোটের সময় হাওড়া সদর আসনকে কেন্দ্র করে ভাইয়ের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল তৃণমূলনেত্রীর। ওই আসনে প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন বাবুন। যদিও শেষ পর্যন্ত হাওড়া সদর আসনে প্রার্থী করা হয় তৎকালীন সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এর পরেই বাবুন দলের সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেন। ওই আসনে নির্দল প্রার্থী হিসাবে লড়াই করার কথাও ঘোষণা করেন। শেষ পর্যন্ত যদিও তা করেননি। কিন্তু দলনেত্রী মমতা প্রকাশ্যেই তা নিয়ে ভাইকে কটাক্ষ করেন। শিলিগুড়িতে থাকাকালীন সাংবাদিক সম্মেলন করে বাবুনের সঙ্গে সব সম্পর্ক ত্যাগ করার কথা ঘোষণা করেন। তার পরে এ বছর বাবুনকে মমতা ভাইফোঁটা দেবেন কি না, তা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছিল। জল্পনায় জল ঢেলে রবিবার সাড়ে ১২টা নাগাদ বাকি ভাইদের সঙ্গে বাবুনকেও প্রতি বারের মতো ফোঁটা দেন মমতা। সেই সঙ্গে তিনি ফোঁটা দেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি, মেয়র ফিরহাদ হাকিম, রাজ্যের বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, পর্যটন মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন, রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও ব্রায়েন, সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
ভাইফোঁটা উপলক্ষে রবিবার মমতার বাড়িতে যান কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। বরাবরই কালীঘাটের বাড়িতে ফোঁটা নিতে যান কানন। সেই রীতিতে ছেদ পড়েছিল ২০১৮ সালে। তখনও মন্ত্রিসভা বা কলকাতার মেয়র পদ থেকে ইস্তফা দেননি শোভন। কিন্তু ঘনিষ্ঠমহলের দাবি ছিল, দলনেত্রীর সঙ্গে তাঁর দূরত্ব বেড়ে গিয়েছিল। সে কারণেই ওই বছর মমতার বাড়িতে কালীপুজো এবং ভাইফোঁটায় দেখা যায়নি শোভনকে। যদিও পরের বছর, ২০১৯ সালে বৈশাখীকে নিয়ে মমতার বাড়িতে হাজির হয়েছিলেন তিনি। এ বছরও তার অন্যথা হয়নি।
মমতার কালীঘাটের বাড়ির অদূরে অভিষেকের বাড়ি ‘শান্তিনিকেতন’-এও জমে উঠেছিল ভাইফোঁটার আসর। সেখানে জড়ো হয়েছিলেন তাঁর ভাই-বোনেরা। সূত্রের খবর, খাওয়া-দাওয়ারও আয়োজন করা হয়েছিল সেখানে।