জমিতে জমে জল, পোখরাজ আলু চাষ করতে পারলেন না কাটোয়ার চাষিরা
বর্তমান | ০৪ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, কাটোয়া: ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’র প্রভাবে বৃষ্টির মাশুল গুনতে হচ্ছে চাষিদের। বহু জমিতে এখনও জল জমে রয়েছে। সেকারণে কাটোয়া মহকুমাজুড়ে এখনও আলুচাষ শুরু হয়নি। অনেক জমির ধানও নষ্ট হয়েছে। সেই ধান এখনও মাঠেই পচছে। মহকুমার অধিকাংশ জমি এখনও কাদায় ভর্তি থাকায় চিন্তায় পড়েছেন আলু চাষিরা। পোখরাজ আলু এখনও বসানো গেল না। কবে জমি শুকাবে সেই চিন্তায় ভুগছেন চাষিরা। কাটোয়া মহকুমা কৃষি আধিকারিক প্রলয় ঘোষ বলেন, এবার আলুচাষ করতে চাষিদের দেরি হবে। ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই আশা করি জমি শুকিয়ে যাবে। তখন আলুর চারা বসানো যাবে। তবে নিচু জমি নয়, চাষিরা উঁচু জমিতে আলু চাষ করতে পারেন।
কাটোয়া-১ ব্লকের শুনিয়া, সুড্ডা, গোয়াই মৌজায় পোখরাজ আলু চাষ করা হয়। আশ্বিন মাসে ধান তোলার পরই ওই আলুচাষ শুরু হয়ে যায়। মাত্র ৬০ থেকে ৭৫ দিনের মাথায় ওই আলু জমি থেকে তোলা হয়। এখন ওই আলু চাষই বন্ধ রাখতে হয়েছে বলে জানান শুনিয়া এলাকার চাষিরা। কারণ কয়েকদিন আগে ডানার প্রভাবে নিম্নচাপের জেরে জল ও নদীর জলে ডুবে ছিল জমি। জমিতে এখনও কাদা রয়েছে। আলু চাষের জন্য শুকনো ঝুরঝুরে মাটির দরকার হয়। সেই জমি এখনও তৈরি করতে পারেননি চাষিরা।
এক বিঘা জমিতে আলুর চাষ করতে গেলে গড়ে ২৫-৩০ হাজার টাকা খরচ হয়। ধান নষ্ট হওয়ায় অনেকেই সেই টাকা এখনও জোগাড় করে উঠতে পারেননি। আবার যাঁরা জোগাড় করেছেন তাঁদের অনেকেরই জমি এখনও শুকায়নি। কাটোয়ার মঙ্গলকোট ব্লকে বেশি পরিমাণে আলুর চাষ হয়। গোতিষ্ঠা, সরুলিয়া, লাখুরিয়া এলাকায় জমিতে এখনও ধান পচছে। জমিতে জল দাঁড়িয়ে রয়েছে। সেখানকার বাসিন্দা উদয় মাঝি, উৎপল দাস বলেন, এবার অজয়ের জলে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এখনও জমিতে জল রয়েছে। আলু চাষ হবে কী করে? তাছাড়া নভেম্বর মাসের শুরুতেই আলুচাষের জমি পরিচর্যা করতে হয়। এবার আলুর বীজ বসাতে অনেকটা দেরি হবে। পূর্ব বর্ধমান জেলায় প্রতি বছর ৭০-৭২ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়। কাটোয়া মহকুমার পাঁচ ব্লকে প্রায় ৩ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়। জ্যোতি, চন্দ্রমুখী ও পোখরাজ এই তিন জাতের আলু চাষ হয়। যদিও এরমধ্যে জ্যোতি জাতের আলু বেশি চাষ হয়। পূর্বস্থলীর বিশ্বরম্ভা, কালেখাঁতলা-১ ও ২ পঞ্চায়েত এলাকায় জ্যোতি আলু বেশি চাষ হয়। সেখানেও এবার এখনও অনেকেই চাষ শুরু করতে পারেননি। মঙ্গলকোটের সরুলিয়ার চাষি নিমাই সাহা বলেন, গতবছরেও আলুতে লোকসান হয়েছে। জালপাড়া, কাশেমনগর, সরুলিয়া এলাকায় নতুন করে আলুর বীজ পুঁততে হয়েছিল। এবার আলুর জমিতে জল দাঁড়িয়ে রয়েছে। জমি তৈরি হয়নি।-নিজস্ব চিত্র