• ছাদে ১৫৩ প্রজাতির ড্রাগন ফলের চাষ
    বর্তমান | ০৪ নভেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জামুড়িয়া: বিল্ডিংয়ের ছাদে ১৫৩প্রজাতির ড্রাগন ফল চাষ করে নজর কাড়লেন জামুড়িয়ার চাষি। মালয়েশিয়ান রেড থেকে ভিয়েতনাম হোয়াইট, ডিলাইট থেকে পার্পল হেজ-নানা উৎকৃষ্ট প্রজাতির ড্রাগন ফলের চারা বিভিন্ন দেশ থেকে এনে চাষ করেছেন জগন্নাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। জামুড়িয়ায় সেসব প্রজাতির ড্রাগন ফ্রুটের সফল চাষ করে তিনি কেন্দ্রীয় গবেষকদের কুর্নিশও আদায় করে নিয়েছেন।

    ড্রাগন ফ্রুট উচ্চ রক্তচাপ, মধুমেহর মতো রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। ক্যাকটাস প্রজাতির এই ফল যাতে বিদেশ থেকে আমদানি না করতে হয়, সেজন্য এর ফলন বাড়াতে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার উদ্যোগী হয়েছে। বেঙ্গালুরুতে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব হর্টিকালচারের বিজ্ঞানীরা ড্রাগন ফ্রুট চাষ নিয়ে গবেষণা করছেন। সেখানকার প্রিন্সিপাল সায়েন্টিস্ট জি করুণাকরণ বলেন, আমাদের প্রাথমিক লক্ষ, ২০২৫ সালে দেশে ১০হাজার হেক্টর জমিতে ড্রাগন ফল চাষ করা। দেশের মানুষ ন্যায্য দামে এই উৎকৃষ্ট ফল পর্যাপ্ত পরিমাণে পেলে তাঁদের স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে। দেশের কয়েকজন চাষি ড্রাগন ফল চাষ নিয়ে উল্লেখযোগ্য কাজ করেছেন। জগন্নাথ বন্দ্যোপাধ্যায় তার মধ্যে অন্যতম।

    রাজ্যে উদ্যানপালন বিভাগের অধিকর্তা দীপ্তেন্দু বেরা বলেন, আমরা ড্রাগন ফলের চাষ বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছি। এবছর ১০ লক্ষ চারা বিলি হয়েছে। জগন্নাথবাবুর উ঩দ্যোগ খতিয়ে দেখা হবে।

    ড্রাগন ফলে ফাইবারের পরিমাণ বেশি থাকায় তা উচ্চ রক্তচাপ, মধুমেহ, কোষ্ঠকাঠিন্য মোকাবিলায় সাহায্য করে। এটি রক্তে প্লেটলেটের সংখ্যাও বাড়াতে পারে। করোনা সঙ্কটের সময় থেকেই ড্রাগন ফ্রুট ভারতবাসীর কাছে অতি পরিচিত হয়ে ওঠে। এর উৎপত্তিস্থল মেক্সিকো হলেও এখন ভারতের পাশাপাশি চীন ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার নানা দেশে এই ফল চাষ হয়। 

    জগন্নাথবাবুর বাবা ইসিএলের কর্মী ছিলেন। তিনি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে সাম্মানিক স্নাতক হয়েছেন। তারপর স্পোর্টস নিউট্রিশিয়ান বিষয়ে পড়াশোনা করেন। ২০২১ সালে করোনার সময় তিনি জামুড়িয়ার নিঘায় নিজেদের বিল্ডিংয়ে ড্রাগন ফ্রুট চাষ শুরু করেন। ড্রাগন ফ্রুট বিষয়ক নানা সেমিনারে অংশ নিতে একাধিকবার বিদেশে গিয়েছেন। তিনি বলেন, এই ফল চাষ করলেও চাষিরা ব্যাপক লাভবান হবেন। বিদেশে গিয়ে দেখেছি, এই ফল দিয়ে ফুড কালার, মধু, বিউটি প্রোডাক্ট, এমনকী, ওয়াইনও তৈরি হচ্ছে।

    জগন্নাথবাবুদের বিল্ডিংয়ে ৯ হাজার বর্গফুটের বিশাল ছাদে ১৩০০ গাছ রয়েছে। সেখানে তাইওয়ান, থাইল্যান্ড, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোনিয়া, ফ্রান্স, মেক্সিকোর নানা উন্নত প্রজাতির ড্রাগন ফল চাষ হয়েছে। এই গাছ খুব কম জলেও বেঁচে থাকতে পারে। পশ্চিম বর্ধমানে বিস্তীর্ণ অংশের জমি অনুর্বর, জলের অভাব রয়েছে। তাই এই জেলায় ড্রাগন ফলের চাষ বিস্তার লাভ করতে পারে। পশ্চিম বর্ধমান জেলা উপ-কৃষি অধিকর্তা জাহিরুদ্দিন খান বলেন, আমি জগন্নাথবাবুর বাগান পরিদর্শন করেছি।
  • Link to this news (বর্তমান)