• জামাতাড়া গ্যাংয়ের এবার নয়া কৌশল, মোবাইল হাতিয়ে নিয়ে  সাফ করছে অ্যাকাউন্ট
    বর্তমান | ০৪ নভেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: ওটিপি বা লিঙ্ক পাঠিয়ে অ্যাকাউন্ট সাফ করতে সাইবার অপরাধীদের অনেক কসরত করতে হচ্ছে। পুলিস লাগাতার প্রচার চালানোয় এখন মানুষ অনেক সচেতন। অনেকেই তাদের পাতা ফাঁদে পা দিচ্ছে না। তাই এবার ‘ডাইরেক্ট অ্যাকশন’এ নেমেছে সাইবার অপরাধীরা। মোবাইল চুরি করে তারা মুহূর্তের মধ্যে অ্যাকাউন্ট সাফ করে দিচ্ছে। কয়েক দিন আগে ভাতারের এক ব্যক্তির মোবাইল চুরি করে তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা হাতিয়েছে। বর্ধমানের দুই ব্যক্তির অ্যাকাউন্টও এভাবেই সাফ করা হয়েছে। 

    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, অ্যাকাউন্টের সঙ্গে মোবাইল নম্বর সংযুক্ত থাকে। অনলাইনে টাকা লেনদেন করতে এখন আমজনতা অভ্যস্ত। সেই সুযোগই কাজে লাগাচ্ছে প্রতারকরা। তারা মোবাইল চুরি করার কিছুক্ষণের মধ্যে অন্য অ্যাকাউন্টে টাকা হস্তান্তর করে নিচ্ছে। লিঙ্ক বা ওটিপির কোনওকিছুর দরকার হচ্ছে না। এক পুলিস আধিকারিক বলেন, মোবাইল চুরি হলে সঙ্গে সঙ্গে নম্বর নিষ্ক্রিয় করার পাশাপাশি ব্যাঙ্কেও তা জানাতে হবে। প্রতিটি ব্যাঙ্কের হেল্পলাইন নম্বর রয়েছে। তবে সেই নম্বরে ফোন করার আগেও সচেতন হতে হবে। সাইবার অপরাধীরা ব্যাঙ্কের নামে নিজেদের নম্বর ছড়িয়ে রাখে। নিশ্চিত হওয়ার পর তা জানাতে হবে। 

    পুলিস সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, মোবাইল চুরির আগে দুষ্কৃতীরা শহরে আশ্রয় নিচ্ছে। হোটেল ভাড়া নিয়ে থাকার পর তারা অভিযানে নামছে। ভিড় বাস, বাজার এবং অফিস চত্বরে তারা থাকছে। মোবা‌ইল হাতিয়ে অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা সাফ করে নেওয়ার পর তারা ফোন ফেলে দিচ্ছে। চুরির মোবাইল মালিকরা ফেরত পেলেও অ্যাকাউন্টের টাকা ঘরে ফিরছে না। আধিকারিকদের দাবি, মোবাইল চুরি করে নিজেদের কব্জায় রাখলে খুব সহজেই অপরাধীদের ধরা সম্ভব হবে। টাওয়ার লোকেশন ধরে তাদের কাছে পৌঁছনো যায়। সেই ঝুঁকি তারা নিচ্ছে না। মোবাইল চুরির কয়েক মিনিটের মধ্যে তারা কাজ সেরে ফেলছে। সাইবার ক্রাইম দপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, এর পিছনেও জড়িয়ে রয়েছে সেই জামতাড়া। এখন সেখানকার দুষ্কৃতীরা নিজের এলাকায় বসে সেভাবে ‘অপারেশন’ করছে না। বিভিন্ন রাজ্যের পুলিসের নজরদারি জামতাড়ার উপর রয়েছে। সেই কারণেই প্রতারকরা বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে গিয়ে অন্য কায়দায় মোবাইল চুরি করছে। 

    অতিরিক্ত পুলিস সুপার অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, মোবাইল চুরি হলে সঙ্গে সঙ্গে থানায় জানাতে হবে। কম সময়ের মধ্যে জানা গেলে টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হয়। পুলিসের দাবি, প্রতারকরা ইউপিআইয়ের মাধ্যমে চোরাই মোবাইল থেকে অন্য অ্যাকাউন্টে টাকা হস্তান্তর করে। সঙ্গে সঙ্গে জানা গেলে যে অ্যাকাউন্টে টাকা জমা পড়েছে সেটি লক করা যাবে। তারা টাকা তুলতে পারবে না। সম্প্রতি মোবাইল চুরি করে অ্যাকাউন্ট সাফ করার প্রবণতা বেড়েছে। ভিড় জায়গায় ঘোরাফেরার সময় মোবাইল সাবধানে রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন আধিকারিকরা।
  • Link to this news (বর্তমান)