প্রাক্তন তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনা, ধৃতকে দেওয়া হয়েছিল তিন লক্ষ টাকার সুপারি
বর্তমান | ০৪ নভেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: বহরমপুরের প্রাক্তন তৃণমূল নেতা প্রদীপ দত্ত খুনের ঘটনায় তিন লক্ষ টাকার সুপারি দেওয়া হয়েছিল। প্রদীপবাবুরই এক পুরনো সহকর্মীকে শ্যুটার হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছিল। শনিবার উত্তরপ্রদেশ থেকে গ্রেপ্তার হয় শ্যুটার আকাশ দত্ত। পুলিসি জিজ্ঞাসাবাদে গুলি চালানোর ঘটনা স্বীকার করেছে সে। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে খুনের ব্যাপারে বেশকিছু তথ্য পেয়েছে বহরমপুর থানার পুলিস।
মূল অভিযুক্ত আকাশ এক সময় প্রদীপবাবুর সঙ্গে জমির ব্যবসা ও প্রোমোটারির কাজে সাহায্য করত। প্রদীপবাবুর প্রতিবেশী সে। পরে তাঁর সঙ্গে আকাশের দূরত্ব বাড়ে। সেই সুযোগে আকাশকে টোপ দেওয়া হয় যে, প্রদীপকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিতে পারলেই মিলবে তিন লক্ষ টাকা। বন্ধুর বাইকে চেপে অপারেশনে নামে আকাশ। তবে অপারেশন করার পর পুলিসি তাড়ায় সে টাকা নিতে পারেনি। ঘটনার পর সে উত্তরপ্রদেশে গা ঢাকা দিয়ে ছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বহরমপুর থানার পুলিসের দল সেখানে গিয়ে তাকে ধরে নিয়ে আসে। ধৃতকে হেফাজতে নিয়ে লাগাতার জিজ্ঞাসাবাদ করা চলছে।
বহরমপুর থানার আইসি উদয়শঙ্কর ঘোষ বলেন, এই খুনের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত দু’জনকে ধরা হল। বাইকে করে এসে যে দু’জন গুলি চালিয়েছিল, তাদের মধ্যে একজন এখনও পলাতক। তার খোঁজেও তল্লাশি চলছে। তবে আকাশের চালানো গুলিতেই প্রদীপবাবুর মৃত্যু হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। সে ঘটনার কথা স্বীকারও করেছে।
উল্লেখ্য, গত ১৬ অক্টোবর প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে খুন হন প্রদীপবাবু। রাধারঘাট-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের গোয়ালজান নাথপাড়ায় বাইকে করে এসে আকাশ ও তার এক বন্ধু এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে প্রদীপবাবুকে খুন করে। ইদানিং জমি কেনাবেচার পাশাপাশি প্রোমোটারির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন প্রদীপবাবু। একসময় বহরমপুর ব্লকের তৃণমূলের প্রাক্তন সহ-সভাপতিও ছিলেন তিনি। তবে এই ঘটনার পিছনে ব্যবসা সংক্রান্ত বিবাদ আছে বলেই পুলিস জানিয়েছে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন ওই বন্ধুর বাইক চালাচ্ছিল আকাশ। প্রদীপবাবুকে রাস্তার ধারে দেখতে পেয়ে আকাশের বাইকের পিছন থেকে নেমে যায় তার বন্ধু। বন্দুক তাক করে থাকে প্রদীপবাবুর দিকে। ফায়ারিং করলেও বন্দুক থেকে গুলি বের হয়নি। প্রদীপবাবু ভয়ে রাস্তার ধারে পড়ে যান। তখন বাইক থেকে নেমে এসে আকাশ বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি চালায়। রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন প্রদীপবাবু। সঙ্গে সঙ্গে এলাকা ছেড়ে পালায় আকাশ ও তার বন্ধু।
এর আগে বুবাই দাস নামে এক ‘টিপারকে’ গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করে বহরমপুর থানার পুলিস। ঘটনার আগে দেড় মাস ধরে প্রদীপবাবুর উপরে নজর রাখত ওই যুবক। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আকাশ ও তার বন্ধুর ব্যাপারে জানতে পারে পুলিস। তারপরেই উত্তরপ্রদেশে একটি টিম গিয়ে আকাশকে পাকড়াও করে।