‘অসুস্থ’, থানায় হাজিরা দিলেন না প্রতারণায় অভিযুক্ত পদ্মনেতা
বর্তমান | ০৪ নভেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: ১কোটি ৬০লক্ষ টাকা প্রতারণার মামলায় দ্বিতীয়বার নোটিস পেয়ে থানায় হাজিরা দিলেন না অভিযুক্ত বিজেপি নেতা নবারুণ নায়েক। রবিবার সকাল ১১টায় রাজ্য বিজেপির সম্পাদক নবারুণকে থানায় তলব করেছিলেন তদন্তকারী অফিসার। তাঁকে জেরা করার জন্য তৈরি ছিলেন অফিসাররা। কিন্তু, ওই নেতা এদিন হাজিরা দেননি। অসুস্থতার কারণে এদিন হাজিরা দেওয়া সম্ভব নয় বলে পুলিসকে চিঠি দিয়ে জানান। আগামী ১০নভেম্বর পর্যন্ত তিনি তমলুকে থাকতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন। সেইমতো আবারও নোটিস পাঠাতে চলেছে তমলুক থানা।
এর আগে ২২ অক্টোবর ওই নেতাকে থানায় তলব করা হয়েছিল। সেদিন সস্ত্রীক নবারুণ নায়েক থানায় যান। তদন্তকারী অফিসারদের একাধিক প্রশ্নের উত্তর অধরা থেকে যায়। সেইসব প্রশ্নের উত্তর জানতে এদিন ফের নবারুণকে তলব করা হয়েছিল। কিন্তু, তিনি আসেননি। অভিযোগকারী ঠিকাদারের বক্তব্য, নবারুণের স্ত্রী তনুশ্রীর গুয়াহাটিতে চারদিনের হোটেলের বিল, দিল্লি-গুয়াহাটি ফ্লাইটের টিকিট তাঁর সংস্থা কেটে দিয়েছে। সেইসব বিল থানায় জমা দেওয়া হয়েছে। ২২অক্টোবর এনিয়ে সস্ত্রীক নবারুণকে প্রশ্ন করা হলে বিষয়টি অসমে ঘটেছে বলে এড়িয়ে যান। এদিন আরও বেশকিছু তথ্য নিয়ে তদন্তকারী অফিসার জেরা করার জন্য ডেকেছিলেন।
উল্লেখ্য, কলকাতার হাইল্যান্ড এলাকার বাসিন্দা বিশ্বজিৎ দত্ত গত ১০অক্টোবর তমলুক থানায় সস্ত্রীক নবারুণ সহ মোট ছ’জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করেন। পেশায় ঠিকাদার বিশ্বজিৎবাবুর অভিযোগ, বোরোল্যান্ড স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে মোটা টাকার কম্বল সাপ্লাইয়ের নামে ১কোটি ৬০লক্ষ টাকা কমিশন নিয়েছেন নবারুণ। অসমের গুয়াহাটির হোটেলে এনিয়ে কথাবার্তা হয়। সেখানে নবারুণের স্ত্রী হাজির ছিলেন। সরকারি নথি জালিয়াতি করে ৪০কোটি টাকা মূল্যের কম্বল সাপ্লাইয়ের ভুয়ো অর্ডার দেওয়া হয়। তারপর কমিশন বাবদ ওই টাকা নেওয়া হয়েছে। গোটা বিষয়টি ভুয়ো জানার পর বিশ্বজিৎবাবু টাকা ফেরতের জন্য নবারুণের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এরপরই ওই ঠিকাদার তমলুক থানায় এফআইআর করেছেন। তাঁর আরও অভিযোগ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারের নাম নিয়ে ওই প্রতারণা করা হয়েছে।
তমলুক থানার আইসি সুভাষচন্দ্র ঘোষ বলেন, রবিবার নবারুণ নায়েককে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু, তিনি আসেননি। অভিযোগকারী ঠিকাদার বলেন, নথি জালিয়াতি সহ ওই প্রতারণার যাবতীয় তথ্য আমার কাছে রয়েছে। আমি থানায় অনেক তথ্য তুলে দিয়েছি। সম্ভবত পুলিসের কাছে ওইসব নথি পৌঁছে যাওয়ার পর তদন্তকারী অফিসারের সঙ্গে মুখোমুখি হওয়ার সাহস পাচ্ছেন না নবারুণ নায়েক। এনিয়ে নবারুণের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ পাঠানো হলেও জবাব দেননি।