নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: রসুন ৪০০ টাকা কেজি! পদ্মার ইলিশ ২২০০ টাকা। খাসির মাংস প্রতি কেজি ৭৫০-৮০০ টাকা। বাজার দর যতই চড়ুক ভাইফোঁটায় রসনাতৃপ্তিতে কার্পণ্য করল না মধ্যবিত্ত বাঙালি। ভোর হতেই বাজারের ব্যাগ নিয়ে খাসির মাংসের দোকানে লাইন দিতে দেখা গেল বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদেরও। এদিন বহরমপুর, লালবাগ, কান্দি, জঙ্গিপুর ও ডোমকল মহকুমার সর্বত্রই বাজারে ছিল ভিড়।
মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন বাজারে এদিন দর ছিল বেশ চড়া। অনেক দাদারাও বোন ও দিদিদের জন্য ভূরিভোজের আয়োজন করেন এদিন। কেউ কেউ আবার রান্নাবান্নার ঝামেলায় না গিয়ে সপরিবারে হোটেল কিংবা রেস্তরাঁয় ভিড় জমালেন। বহরমপুর ও লালবাগ শহরের অধিকাংশ হোটেল ও রেস্তরাঁ এদিন দুপুর থেকে ছিল ভিড়ে ঠাসা। এদিন জেলার বাজারে আদা ১২০ টাকা, কাঁচালঙ্কা ১৬০ টাকা, পেঁয়াজ ৬০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা, আলু ৩৫-৪০ টাকা, পটল ৪০-৫০ টাকা, বেগুন ৬০-৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। তবে রসুনের দাম মাত্রা ছাড়িয়েছে। বহরমপুরের বাসিন্দা প্রাণকৃষ্ণ দাস বলেন, কিছুদিন বাদে রসুনের দাম আর খাসির মাংসের দাম একই হয়ে যাবে। ১ কেজি খাসির মাংস কিনলাম। পাশাপশি ২৫০ গ্রাম রসুন কিনতেই অবস্থা খারাপ। ভাইফোঁটার ভূরিভোজের রান্না হবে। রকমারি পদে রসুন তো লাগবেই। কিছু করার নেই। চড়া দাম দিয়ে প্রতিদিনই বাজার করতে হচ্ছে। আর এসব উৎসবের দিনে তো বাড়তি টাকা খসবেই।
স্বর্ণময়ী বাজারের আনাজ বিক্রেতা রমেন মণ্ডল বলেন, ৩৮০ টাকা কেজি দরে রসুন কিনেছি। আমরা খুচরো চারশো টাকা দরে বিক্রি করছি। আমাদেরও উপায় নেই। রসুনের দাম খুব বেড়েছে। আদা ও পেঁয়াজের দাম তুলনামূলক ঠিক আছে। বহরমপুর কোর্ট মার্কেটের মাছ বিক্রেতা অরুণ হালদার বলেন, শনিবার রাত থেকেই ভালো বিক্রি হয়েছে। অনেকেই ভাইফোঁটার দিন সকালবেলায় ভিড়ে বাজার করতে পছন্দ করেন না। তাই আগের দিন মাছ কিনে রাখেন। এদিন পমফ্রেট ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। ইলিশের দাম ছিল একটু চড়া। পদ্মার ইলিশ ২২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি। এক একটি মাছের ওজন প্রায় দেড় কেজি। তবে কিছুটা ছোট ইলিশ ছিল, যার দাম ১৫০০ থেকে ১৮০০ টাকা কেজি। বড় রুই কাতলারও ভালো চাহিদা ছিল বাজারে।
লালবাগের ক্রেতা শুভাশিস মুখোপাধ্যায় বলেন, বাড়িতে শালাবাবুরা এসেছেন। তাই গিন্নির ফর্দ নিয়ে বাজারে বেরিয়েছি। খাসির মাংস আর ইলিশ কিনলাম। কিছু আনাজপত্র কিনতে হবে। মাসের শুরুতেই ভাইফোঁটা পড়েছে বলে কিছুটা রক্ষে। বহরমপুরের পঞ্চাননতলার বাসিন্দা রুবি চট্টোপাধ্যায় বলেন, আমার দুই ভাই বাড়িতে এসেছে। আজ রান্নাবান্নার ঝামেলা করিনি। দুপুরের রেস্তরাঁয় গিয়ে সবাই মিলে খাব। তারপর সিনেমা দেখতে যাব।