• সম্প্রীতির ভাইফোঁটা, হোমে পাকিস্তানি কিশোরকে ফোঁটা দিল ভারতীয় কিশোরী
    বর্তমান | ০৪ নভেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: পাকিস্তানি ভাইকে ফোঁটা দিল ভারতীয় বোন! সম্প্রীতির এক অনন্য নজির জলপাইগুড়ির জুভেনাইল কোরক হোমে। তবে, কোচবিহারের হোমে থাকা বোন আসতে না পারায় মন খারাপ জলপাইগুড়ির হোমে থাকা বাংলাদেশি ভাইয়ের। বছর খানেক আগে মায়ের সঙ্গে দেশ ছাড়ে ১২ বছরের এক পাকিস্তানি কিশোর। নেপাল সীমান্তে এসে তারা ধরা পড়ে। মায়ের ঠাঁই হয় জেলে। আদালতের নির্দেশে পাকিস্তানি ওই কিশোরকে নিয়ে আসা হয় জলপাইগুড়ির কোরক হোমে। আপাতত সেখানেই দিন কাটছে তার।

    রবিবার কোরক হোমের তরফে ভাইফোঁটার আয়োজন করা হয়েছিল। কী এই ভাইফোঁটা, জানে না ওই পাকিস্তানি কিশোর। তবে ভ্রাতৃদ্বিতীয়ার সকালে শহরেরই অন্য হোম থেকে আসা এক ভারতীয় বোনের হাত থেকে ফোঁটা পেয়ে সে আনন্দে বিহ্বল হয়ে পড়ে। ক্ষণিকের জন্য হলেও হোমের চার দেওয়ালের অন্দরে তৈরি হয় সম্প্রীতির পরিবেশ। একইভাবে এবারই প্রথম ভাইফোঁটা দেখল কোরক হোমে থাকা মায়ানমারের দুই শিশু-কিশোর। বাবা-মায়ের সঙ্গে দেশ ছাড়ে তারা। মাস ছ’য়েক আগে ধরা পড়ে নেপাল সীমান্তে। বাবা-মায়ের জেল হয়েছে। দুই ভাই জলপাইগুড়ির হোমে। এদিন তাদের ফোঁটা দিল শহরেরই অন্য এক হোমের মেয়েরা। অচেনা বোনদের হাত থেকে ফোঁটা নিয়ে কোরকের ছেলেরা উপহার হিসেবে তুলে দিল নিজেদের হাতে আঁকা ছবি থেকে পুতুল, পাখি। বোনেরা ভাইদের মিষ্টিমুখ করিয়ে তুলে দিল কলম, রং পেন্সিল।

    এদিকে, ভাইফোঁটার সকালে মনে আক্ষেপ রয়েই গেল কোরকে থাকা এক বাংলাদেশি কিশোরের। সকাল থেকে সে অনেক আশা করে বসেছিল, ভাইফোঁটা উপলক্ষ্যে কোচবিহারের হোম থেকে বোন আসবে। কিন্তু শেষপর্যন্ত বোন না আসায় মন খারাপ ঘুচল না কুষ্টিয়ার ওই কিশোরের। বাবা-মা, বোনের সঙ্গে বাড়ি ছাড়ে সে। কোচবিহার সীমান্তে এসে ধরা পড়ে যায় তারা। অনুপ্রবেশের দায়ে জেল হয় বাবা-মায়ের। আদালতের নির্দেশে বোন চলে যায় কোচবিহারের হোমে। কিশোরের ঠাঁই হয় জলপাইগুড়ির হোমে। হোম কর্তৃপক্ষও চেয়েছিল, ভাইফোঁটার দিনে ভাই-বোনের দেখা হোক। কিন্তু তা আর হয়নি।

    কোরক হোমের সুপার গৌতম দাস বলেন, কোচবিহারের হোম থেকে মেয়েদের আসার কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তা বাতিল হয়। তবে আমাদের হোমের সবাই ফোঁটা পেয়েছে। জলপাইগুড়ির একটি হোম থেকে মেয়েরা ফোঁটা দিতে এসেছিল। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও ছোট ছোট মেয়েদের নিয়ে এসেছিল।

    অন্যদিকে, পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন জলপাইগুড়ির অনুভব হোমের মেয়েরা ভাইদের মঙ্গল কামনায় ফোঁটা দিল গাছে। পারিবারিক বন্ধন রক্ষার সঙ্গেই ফোঁটার মাধ্যমে হোমের অন্দরেই সবুজ বাঁচানোর বার্তা দেয় তারা। -নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)