তরাই-ডুয়ার্সে ধান পাকা শুরু হতেই লোকালয়ে হাতির হানা
বর্তমান | ০৪ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার ও নকশালবাড়ি: ধানের মরশুমে উত্তরবঙ্গের তরাই ডুয়ার্সে হাতির হানা বাড়ছে। শিলিগুড়ি মহকুমার গ্রামীণ এলাকা অর্থাৎ তরাই অঞ্চলে ফসল বাঁচাতে বনকর্মীদের সঙ্গে রাত জেগে ধান খেত পাহারা দিচ্ছেন চাষিরা। ইতিমধ্যে কার্শিয়াং ডিভিশনের বিভিন্ন জঙ্গলে ঘাঁটি গেঁড়েছে ১৫০টি হাতি। যাদেরকে সামাল দিতে বেগ পেতে হচ্ছে বনকর্মীদের। এজন্য বনকর্মীদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন চাষিরা। অন্যদিকে, আমন ধান পাকতেই মাদারিহাটের লোকালয়ে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের হাতির দলের আনাগোনা শুরু হয়েছে। প্রায় ১২০-১২৫টি হাতির দল এখন থেকেই ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে সন্ধ্যা নামলেই হানা দিচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়। ধান পাহারা দিতে কৃষকরা টং ঘর তৈরি করছেন। এদিকে লোকালয়ে হাতির আনাগোনা শুরু হতেই বনদপ্তর ফের এসএমএস অ্যালার্ট চালু করেছে।
নকশালবাড়ির মাল্লাবাড়ির ধান চাষি মহম্মদ কাদির বলেন, পাকা ধান কেটে জমিতে রেখেছি। তবে রাত হতেই এলাকায় হাতির দৌরাত্ম্য শুরু হয়। বনকর্মীদের সহযোগিতায় রাতে জমির ফসল পাহারা দিচ্ছি। চাষি সুজন বর্মন, জামিল খান বলেন, হাতির হানা থেকে পাকা ধান বাঁচাতে সবাই মিলে রাত জাগছি।
কার্শিয়াংয়ের ডিএফও দেবেশ পাণ্ডে বলেন, হাতির হানা রুখতে বনকর্মীরা নিয়মিত টহল দিচ্ছেন। পাশাপাশি বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলিও সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে। এখনও পর্যন্ত লোকলয়ে হাতির হানায় কারও মৃত্যু হয়নি। তবে ফসল ও ঘরবাড়ির ক্ষতি হয়েছে। হাতির মোকাবিলা করতে প্রতিটি রেঞ্জে অতিরিক্ত ভ্যান, যোগাযোগের জন্য ওয়াকিটকি ব্যবহার করা হচ্ছে।
এদিকে ডুয়ার্সের জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের ডিএফও প্রবীণ কাসোয়ান বলেন, ধান পাকতেই লোকালয়ে হাতির আনাগোনা শুরু হয়েছে। সেজন্য এসএমএস অ্যালার্ট চালু সহ নজরদারির জন্য একগুচ্ছ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের সহকারী বন্যপ্রাণী সংরক্ষক নভজিৎ দে বলেন, ধান পাকতেই লোকালয়ে হাতির দলের আনাগোনা শুরু হয়েছে। কমপক্ষে ১২০-১২৫টি হাতির দল সন্ধ্যা নামতেই ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে লোকালয়ে ছড়িয়ে পড়ছে। সেজন্য আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়ে নজরদারি শুরু করা হয়েছে।
কিছুদিন আগেও হাতির দলের জাতীয় উদ্যানের পাশে কোনও এলাকায় ঢোকার সম্ভবনা থাকলে বনদপ্তর আগাম এসএমএসের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক করে দিত। সেই এসএমএস অ্যালার্ট ফের চালু করা হয়েছে। এখন থেকেই হাতি উপদ্রুত এলাকাগুলিতে প্রতিদিন দু’হাজার করে এসএমএস করা হচ্ছে। বাড়ানো হয়েছে বনকর্মীদের টহলদারি ও পেট্রলিংও। বিকেল ৫টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত হাতির আনাগোনার উপর কড়া নজরদারি চলছে। এছাড়া জাতীয় উদ্যানে ৩৫টি জয়েন্ট ফরেস্ট ম্যানেজমেন্ট কমিটিও (জেএফএমসি) লোকালয়ে হাতির হানা রুখতে কাজ করছে। - ধানখেতে হাতির হানা। আলিপুরদুয়ারে তোলা নিজস্ব চিত্র।