সংবাদদাতা, মালদহ: ভাইফোঁটার দিন সকালেও ইংলিশবাজারে চড়া দামে বিকোল ইলিশ। ওজন যত বেশি, দামও তত চড়া। তবে এদিন খানিকটা উদারহস্তেই ভাই ও দাদাদের রসনাতৃপ্তির জন্য ইলিশ কিনতে দেখা গিয়েছে অনেককে। পাশাপাশি ইলিশ নিয়ে মিলেছে আরও খানিকটা খুশির বার্তা। সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ফরাক্কার গঙ্গায় মিলছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ইলিশ। ফলে খুশি মালদহের কালিয়াচক-৩ ব্লকের অনেক মৎস্যজীবীই। মূলত গঙ্গা থেকে মাছ ধরেই জীবিকা নির্বাহ করেন তাঁরা। এদিন মালদহের বেশ কয়েকটি পুরবাজারে ইলিশ বিকিয়েছে সর্বোচ্চ প্রায় ২ হাজার টাকা কেজি দরে। ১ কেজি বা তার সামান্য বেশি ওজনের ইলিশের দামই ছিল সবচেয়ে বেশি। তবে ১ কেজির কম ওজনের ইলিশের দাম ছিল ১ হাজার থেকে ১৭০০ টাকা প্রতি কেজি। এত দাম হওয়ার পরেও কিন্তু ভাইফোঁটায় ইলিশ কিনতে কার্পণ্য করেননি বোনেরা। তবে যাঁদের ভাই ও দাদাদের ইলিশ খাওয়ানোর সাধ থাকলেও অত দাম দেওয়া সাধ্যে কুলোয়নি তাঁরাও কিনেছেন গলদা চিংড়ি অথবা পাকা রুই। ওই মাছগুলিও এদিন বিকিয়েছে চড়া দরে। ইংলিশবাজারের ঋষি বঙ্কিম পুরবাজারের এক খুচরো মাছ বিক্রেতা বলেন, দুর্গাপুজোর পর থেকেই ইলিশের জোগান ধীরে ধীরে কমতে থাকে। স্বাদও বর্ষার ইলিশের মতো থাকে না। তবে ভাইফোঁটা উপলক্ষ্যে বেশ কিছু পরিমাণ ইলিশ এসেছে। বিক্রিও হয়েছে অনেক টাকায়। এদিকে ফরাক্কার গঙ্গায় জাল ফেললে গত কয়েকদিন ধরে উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় ইলিশ জালে পড়ছে বলে জানিয়েছেন মৎস্যজীবীরা। পদ্মার মতোই ফরাক্কার গঙ্গায় পাওয়া ইলিশের যথেষ্ট কদর রয়েছে মৎস্যপ্রেমীদের মধ্যে। তবে খুব বেশি সংখ্যায় ফরাক্কার ইলিশ মেলে না। তবে গত কয়েক দিনে ফরাক্কার গঙ্গায় যে হারে ইলিশ উঠতে শুরু করেছে, তাতে খুশি কালিয়াচক-৩ ব্লকের মৎস্যজীবীরা। তাঁরা জানান, সপ্তাহ খানেক ইলিশ ভালোই উঠছে। গঙ্গায় এখন চারিদিকে শুধু নৌকা আর জেলেদের মাছ ধরা চলছে। এই ব্লকের প্রায় গঙ্গা সংলগ্ন পারলালপুর, হোসেনপুর, চর সুজাপুর দিয়ারা, ভাঙাটোলা, লিচুপাড়া, কালীতলা, চকবাহাদুরপুর, কুলিদিয়ারা, শোভাপুর সহ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা বেশিরভাগই মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। তাঁরা জানান, পাইকারি হিসেবে ৩৫০ থেকে ৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের দাম প্রায় ৭০০ টাকা প্রতি কেজি। ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রামের ইলিশ বিকোচ্ছে ১০০০ টাকা কেজি দরে। প্রায় এক কেজি ওজনের ইলিশের দাম ১৪০০ টাকা কেজি প্রতি। রতন মণ্ডল, দীপক হালদারের মতো মৎস্যজীবীরা বলেন, ঝড়ের কারণেই হঠাৎ ইলিশের জোগান এতটা বেড়ে গিয়েছে।