নেশার জন্য ৫০০ টাকা না পেয়ে খুন, কুড়ুল দিয়ে মাথায় কোপ, গ্রেপ্তার ২
বর্তমান | ০৪ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, পতিরাম: নেশা করার জন্য পাঁচশো টাকা চেয়েছিল। না দেওয়ায় কুড়ুল দিয়ে মাথায় কোপ মারল দুষ্কৃতীরা। শনিবার রাতে চিকিত্সার জন্য কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয়েছে আক্রান্তের। হামলার সময় আক্রান্তকে বাঁচাতে গেলে তাঁর ভাই ও স্ত্রীকেও নেশাগ্রস্ত অবস্থায় মারধর করে অভিযুক্তরা।
চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি বালুরঘাটের ল’কলেজ পাড়ার। ঘটনায় দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে বালুরঘাট থানার পুলিস। আইসি শান্তিনাথ পাঁজা বলেন, লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃত ব্যক্তির নাম চন্দন কামেত (৫৬)। পেশায় নির্মাণ শ্রমিক হলেও তান্ত্রিক হিসেবে এলাকায় তাঁর পরিচিতি আছে। এদিকে ওই পাড়ার বাসিন্দা এবং মূল অভিযুক্ত চিত্তরঞ্জন বর্মনও তান্ত্রিক। গত ১ তারিখ চন্দনের বাড়িতে এসেছিলেন তাঁর ভাই ব্রহ্মদেব কামেত। রাতে ভাইকে এগিয়ে দিতে যাওয়ার সময় চন্দনের উপর হামলার ঘটনা ঘটে। মৃতের স্ত্রী পুতুল রবিদাস বালুরঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। প্রথমে মারধর করে খুনের চেষ্টার অভিযোগ করলেও রবিবার খুনের মামলাও যুক্ত হয়েছে।
এবিষয়ে পুতুল বলেন, আমার দেওরকে স্বামী এগিয়ে দিতে গিয়েছিল। সেইসময় অভিযুক্তরা নেশা করার জন্য স্বামীর কাছে পাঁচশো টাকা দাবি করে। টাকা দিতে অস্বীকার করায় স্বামীকে প্রথমে মারধর করে দুষ্কৃতীরা। তারপর কুড়ুল দিয়ে মাথায় কোপ মারে। সেজন্যই আমার স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। তাঁকে বাঁচাতে গেলে দেওর ও আমাকেও মারধর করে হামলাকারীরা।
পুলিস সূত্রে খবর, ধৃতদের নাম চিত্তরঞ্জন বর্মন ও সহদেব বর্মন। তারা এলাকায় তোলা আদায়ের গ্যাং চালায়। এলাকায় মদের আসর বসানোর পাশাপাশি তারা একাধিক অপরাধমূলক কাজের সঙ্গেও যুক্ত। মাঝেমধ্যে ওই দুষ্কৃতীরা সাধারণ মানুষকে রাস্তায় আটকে টাকা দাবি করে বলে অভিযোগ। নভেম্বরের এক তারিখ রাস্তা আটকে চন্দন ও তাঁর ভাইয়ের কাছে টাকা দাবি করেছিল অভিযুক্তরা। না দেওয়ায় বাড়ি থেকে হাঁসুয়া ও কুড়ুল এনে চন্দনের মাথায় কোপ মারে অভিযুক্তরা। প্রথমে আহতকে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে মাথায় দশটি সেলাই করার পর পাঠানো হয় মালদহ মেডিক্যালে। রাতে কলকাতা নিয়ে যাওয়ার পথেই চন্দনের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় বাকি চার অভিযুক্ত ঘটনার পর থেকেই পলাতক বলে পুলিস সূত্রে খবর। তাদের খোঁজ চলছে।
বালুরঘাট জেলা আদালতের সরকারি আইনজীবী দেবাশীষ কর্মকার বলেন, দুই অভিযুক্তকে বিচারক চারদিনের পুলিস হেফাজতে পাঠিয়েছেন।