• দুয়ারে ব্যাঙ্কিং পরিষেবার মাধ্যমে ৬ মাসে হাজার কোটির লেনদেন!
    বর্তমান | ০৪ নভেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ক্রমশ জনপ্রিয় হচ্ছে দুয়ারে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা। এর মাধ্যমে চলতি অর্থবর্ষে এক হাজার কোটি টাকার বেশি আর্থিক লেনদেন হয়েছে গোটা রাজ্যে। অঙ্কটি গতবারের থেকে অনেকটাই বেশি বলে দাবি দপ্তরের। স্বনির্ভর গোষ্ঠী মহিলাদের মধ্যে বাছাই করা কিছু জনকে বিসনেজ করেসপনডেন্স সখী (বিসি সখী) হিসেবে নিযুক্ত করেছে পঞ্চায়েত দপ্তর। তাঁরা আদতে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের এজেন্ট। তাঁরা গ্রামে কাউন্টার খুলে গ্রাহকদের টাকা সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার কাজ করতে সাহায্য করেন। এক কথায়, দুয়ারে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা দিচ্ছেন তাঁরা। ফলে গ্রামীণ মানুষের আর ৫-১০ কিমি ঠেঙ্গিয়ে ব্যাঙ্কে যেতে হচ্ছে না। দিনে-রাতে, যখন-তখন চলছে টাকা সংগ্রহ ও জমার কাজ। এতে উপকৃত হয়েছেন কয়েক লক্ষ মানুষ।

    জলপাইগুড়ির চা বাগানের শ্রমিক মিথিলা ওঁরাও কিংবা মেদিনীপুরের ঝন্টু মণ্ডল—তাঁরা এই বিসি সখীদের মাধ্যমে টাকা তুলে লাভবান হয়েছেন। মিথিলা দেবী বলেন, হঠাৎ টাকার প্রয়োজন পড়েছিল একদিন। তখন ব্যাঙ্কে  যাওয়ার মতো পরিস্থিতি ছিল না। গ্রামে আমাদের এক দিদি আছেন তাঁর সাহায্যে টাকা তুলেছিলাম। ঝন্টুর বক্তব্য, ব্যাঙ্কের তো নির্দিষ্ট সময় আছে যাওয়ার। কিন্তু আমাদের গ্রামের বিসি সখী দিদির কাছে যখন-তখন যাওয়া যায়। একদিন সেরকমই হঠাৎ প্রয়োজন পড়েছিল টাকার। ওই দিদির কাছে গিয়ে টাকা তুলেছিলাম।

    পঞ্চায়েত দপ্তরের হিসেব বলছে, এই বছর ৮৭৪ জন বিসি সখীকে নিয়োগ করা হয়েছে। গতবারের থেকে কিছুটা বেড়েছে এই সংখ্যা। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আর্থিক লেনদেন হয়েছে সর্বমোট ২১ লক্ষের মতো। আর অর্থ তোলা এবং জমা পড়েছে মোট ১০৩৬ কোটি টাকার। তবে গত অর্থবর্ষে লেনদেনের মোট পরিমাণ ছিল ৮৬৪ কোটি টাকার।

    এই নিয়ে কী বলছেন এই বিসি সখীরা? জলপাইগুড়ির মেটেলি গ্রামের বিচিত্রা ভৌমিক বলেন, আমার এখানে বেশিরভাগই চা বাগান। শ্রমিকদের ১৫ দিন অন্তর বেতন ঢোকে। সেইমতো তাঁরা আমার কাউন্টারে এসে টাকা তুলে নিয়ে যান। আবার কেউ কেউ টাকা তুলতে আমার বাড়িতে রাতেও আসেন। এই পরিষেবার মাধ্যমে অনেকেরই সুবিধা হচ্ছে। পূর্ব মেদিনীপুরের মামনি প্রধানের কথায়, রোজ কমপক্ষে ৫০ থেকে ৬০ জন করে আসেন টাকা জমা দিতে এবং তুলতে। ব্যাঙ্কে গেলে লাইন দিয়ে দাঁড়াতে হয়। এখানে সেসব নেই। দরকারে যখন-তখন এসেই তাঁরা টাকা তুলে নিয়ে যান। 
  • Link to this news (বর্তমান)