• কলকাতাকে টেক্কা দিল জেলা, রাজ্যে সর্বাধিক দেহ সংরক্ষণের মর্গ এখন বাঁকুড়া সম্মিলনি মেডিক্যালে
    বর্তমান | ০৪ নভেম্বর ২০২৪
  • বিশ্বজিৎ দাস, কলকাতা: বাঁকুড়ায় চালু হল রাজ্যের মধ্যে সর্বাধিক মৃতদেহ সংরক্ষণের ক্ষমতাযুক্ত আধুনিক মর্গ। বাঁকুড়া সম্মিলনি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেন্সিক ও স্টেট মেডিসিন বিভাগে চালু হল মর্গটি। বিভাগীয় চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, নতুন মর্গে ৭২টি দেহ সংরক্ষিত করার ব্যবস্থা আছে। তাঁদের দাবি, জেলার মেডিক্যাল কলেজগুলি তো বটেই, কলকাতার মেডিক্যাল কলেজ, পিজি, এন আর এস, আর জি কর বা কাঁটাপুকুর—কোনও মর্গেই এতগুলি দেহ সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেই। 

    শুধু তাই নয়, রাজ্যের বাইরে মেডিক্যাল কলেজের মর্গে এতগুলি ‘ডেড বডি ড্রয়ার’ রয়েছে হাতেগোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে। শীর্ষে রয়েছে গোয়া মেডিক্যাল কলেজ। সেখানকার মর্গে ১৫০টি দেহ রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। দিল্লি এইমস-এর নতুন ও পুরনো ক্যাম্পাস মিলিয়ে ১০০টি দেহ সংরক্ষণ করা যায়। পুনের সাসুন হাসপাতালের মর্গেও রয়েছে ১০০টি দেহ সংরক্ষণের বন্দোবস্ত। 

    বাঁকুড়া সম্মিলনি মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, এখানকার ফরেন্সিক বিভাগটি (ডিপার্টমেন্ট অব ফরেন্সিক মেডিসিন অ্যান্ড টক্সিকোলজি) ঢেলে সাজা হয়েছে। ২৪ হাজার বর্গফুট এলাকা নিয়ে তৈরি হয়েছে গোটা বিভাগটি। ২৫০ জন ছাত্রছাত্রীর পঠনপাঠনের ব্যবস্থা করা হয়েছে লেকচার থিয়েটারে। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের গাইডলাইন মোতাবেক রয়েছে পুরুষ ও মহিলার শারীরিক পরীক্ষার আলাদা ঘর এবং প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট, অভিযোগকারী এবং অভিযুক্তের পরীক্ষা রিপোর্ট গোটাটাই ডিজিটাল করা হয়েছে। এমনকী, মৃতের শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের বসার জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা হয়েছে এখানে। রয়েছে পর্যাপ্ত পানীয় জল এবং বাথরুমের বন্দোবস্ত। রয়েছে ভিডিও কনফারেন্সিং রুম। সেখান থেকে চিকিৎসকরা আদালতে সাক্ষীও দিতে পারবেন।  

    আর কী কী শীঘ্রই চালু হতে চলেছে? প্রথমত, ছাত্রছাত্রীদের জন্য চালু হবে ডিজিটাল ক্লাসরুম। দ্বিতীয়ত, শোকসন্তপ্ত পরিবারবর্গের সুবিধার্থে ঘোষণার ব্যবস্থা (পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেম) থাকবে। থাকবে মৃদুস্বরে গান শোনানোর ব্যবস্থাও। বিভাগীয় প্রধান ডাঃ সোমনাথ দাস বলেন, ‘দক্ষিণবঙ্গের একটি জেলাকে অগ্রাধিকার দিয়ে ময়নাতদন্তের এত উন্নত পরিকাঠামো চালু করতে যাবতীয় সাহায্য করেছে রাজ্য। আমরা সেদিক থেকে কৃতজ্ঞ।’ আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ এবং এক সময়ের নামজাদা ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক অধ্যাপক ডাঃ শুদ্ধোদন বটব্যাল বলেন, ‘সোমনাথবাবুদের টিম এবং বাঁকুড়া সম্মিলনি মেডিক্যাল কলেজকে অভিনন্দন জানাই। যতটুকু জানি, এতগুলি দেহ সংরক্ষণের ব্যবস্থা রাজ্যের কোথাও নেই।’
  • Link to this news (বর্তমান)