রাতে ভাইফোঁটা নেওয়ার নিমন্ত্রণ, সকালেই অস্বাভাবিক মৃত্যু দিদির
বর্তমান | ০৪ নভেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: শনিবার রাতেই ফোঁটা নিতে আসার জন্য ভাইদের কাছে মোবাইল বার্তা পাঠিয়েছিলেন এক বধূ। রবিবার সকালে সেই দিদিরই অস্বাভাবিক মৃত্যুর কথা জানতে পারলেন ভাইয়েরা। শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে দিদিকে মৃত অবস্থায় বিছানায় পড়ে থাকতে দেখেন তাঁরা। ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার লিলুয়ার আনন্দনগর এলাকায়। মৃতার নাম সুমনা ঘোষ দে (৩৩)। তাঁর স্বামী মানস দে-কে আটক করেছে পুলিস। তার বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছে মৃতার পরিবার।
মৃতার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দশেক আগে দেখাশোনা করে মানসের সঙ্গে বিয়ে হয় সুমনার। মানস কদমতলা এলাকায় জামাকাপড় বিক্রি করেন। পাশাপাশি ছোটদের ছবি আঁকাও শেখান। দম্পতির সাত বছরের একটি কন্যাও রয়েছে। মৃতার পরিবারের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই পণের দাবি তুলে বিভিন্ন সময়ে ওই বধূর উপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালাতো মানস। এই অত্যাচারের পিছনে তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকেদেরও মদত ছিল বলে অভিযোগ। বছরখানেক আগে অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন সুমনা। প্রায় আড়াই মাস জেল খাটার পর ছাড়া পান মানস। কিন্তু তারপরেও সুমনার উপর তার অত্যাচারের মাত্রা এতটুকুও কমেনি।
প্রতিবছরই ভাইফোঁটা উপলক্ষে নিজের ও খুড়তুতো ভাইদের বাড়িতে ডাকেন সুমনা। এ বছরও তেমনটাই পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি। শনিবার রাতেই মেসেজ করে ভাইদের বাড়িতে ফোঁটা নিতে আসতে বলেছিলেন তিনি। মৃতার খুড়তুতো ভাই কার্তিক ঘোষ বলেন, এরপর এদিন সকাল ৬টা নাগাদ জামাইবাবু ফোন করে আমাদের জানান যে, দিদি ঘুম থেকে উঠছে না। আমরা দিদির শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে ওকে বিছানার উপর অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখি। ওর নাক-মুখ রীতিমতো ফুলে ছিল। সঙ্গে সঙ্গে দিদিকে হাওড়া হাসপাতালে নিয়ে যাই। তাঁদের অভিযোগ, জামাইবাবুই দিদিকে খুন করেছে।
ওই বধূর দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়ে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে লিলুয়া থানার পুলিস। পাশাপাশি মৃতার স্বামীকেও আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু হয়েছে। এদিন সন্ধ্যায় বধূর স্বামী ও তাঁর শ্বশুর-শাশুড়ির বিরুদ্ধে লিলুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে মৃতার পরিবার। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছেন তাঁরা।