জমা জলের সমস্যা মেটাতে ভাঙা হবে ব্রিটিশ আমলের পাইপলাইন, বি গার্ডেন সংলগ্ন এলাকায় বসবে লকগেট
বর্তমান | ০৪ নভেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: গঙ্গার পাড়ে বি গার্ডেন সংলগ্ন এলাকায় জল জমার সমস্যা দীর্ঘদিনের। কিন্তু বছরখানেক ধরে সেই ভোগান্তি কয়েকগুণ বেড়েছে। বৃষ্টি থামার এক সপ্তাহ পরেও জলমগ্ন হয়ে থাকছে এই এলাকার অলিগলি থেকে বাজারহাট। এলাকার বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে এবার হাওড়া পুরসভা ব্রিটিশ আমলের জরাজীর্ণ পাইপলাইন ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গঙ্গার আউটলেটে নতুন পাইপলাইন বসানোর পাশাপাশি জোয়ারের জল ঢুকে পড়া আটকাতে লক গেট বসানোর পরিকল্পনাও করেছে পুরসভা।
বোটানিক্যাল গার্ডেন সংলগ্ন পি কে রায়চৌধুরী লেন, বি জি লেনে একাধিক সরকারি আবাসন, বাজারের পাশাপাশি রয়েছে বড় বস্তি এলাকা। বছরের পর বছর জমা জলের দুর্ভোগের সঙ্গে পরিচিত এলাকার মানুষ। কয়েক মাস আগে পর্যন্তও জমা জল কয়েকদিনের মধ্যে নেমে যেত। গত আগস্ট মাসের পর থেকে দেখা যাচ্ছে, সামান্য বৃষ্টিতেই হাঁটুসমান জল জমছে গোটা এলাকায়। জল ঢুকে পড়ছে বহুতল আবাসনের চত্বরে, একতলা বাড়ির ভিতরে। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা বি গার্ডেন ফেরিঘাট সংলগ্ন লোয়ার ফোরশোর রোডের পাশের বস্তি এলাকার। চলতি মাসে লক্ষ্মীপুজোর দিন এবং ‘ডানা’ ঘূর্ণিঝড়ের সময় রীতিমতো বানভাসি অবস্থা হয়েছিল বাসিন্দাদের। যে নিকাশি দিয়ে এলাকার জল সরাসরি গঙ্গায় ফেলা হয়, কয়েক টন আবর্জনা জমে বন্ধ গিয়েছে সেই পথ। মাঝেমাঝে পুরসভার কর্মীরা নালায় পড়ে থাকা গাছের ডাল সরিয়ে প্রাথমিক কিছু কাজ করলেও তাতে খুব একটা লাভ হয় না। জোয়ারের সময় উল্টোদিক দিয়ে ওই নিকাশিতে গঙ্গার জল ঢুকে আবর্জনা ছড়িয়ে দেয় গোটা এলাকায়।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, গঙ্গার পাড় ঘেঁষে রয়েছে একটি কালভার্ট। তার নীচে রয়েছে ব্রিটিশ আমলে বসানো পাইপলাইন। সেই পাইপ দিয়ে এলাকার জল গঙ্গায় গিয়ে পড়ে। ১০০ বছরেরও বেশি পুরনো সেই পাইপলাইন আদৌ কখনও পরিষ্কার করা হয়েছিল কি না, পুরসভার জানা নেই। জল জমার মূল সমস্যা চিহ্নিত করার পর এবার তাই পূর্ণ সংস্কারে উদ্যোগী হয়েছে পুরসভা। পুরনো পাইপলাইন ভেঙে সেখানে নতুনভাবে টানেল তৈরি করা হবে। মুখবন্ধ টানেলের ভিতরে গাছের ডাল ইত্যাদি পড়ে অবরুদ্ধ হওয়ার ভয়ও থাকবে না। কালভার্টের অপর অংশে বসানো হবে একটি লকগেট। জোয়ারের সময় লক গেট বন্ধ রাখলে কোনওভাবেই নদীর জল এলাকায় ঢুকতে পারবে না। হাওড়া পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ডাঃ সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘আসন্ন শীতেই এই কাজ সম্পূর্ণ করা হবে। ইঞ্জিনিয়াররা এলাকা পরিদর্শন করেছেন। ডিপিআর তৈরির কাজ চলছে।’