• গাইঘাটায় দশম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ, আত্মহত্যার চেষ্টা নির্যাতিতার
    বর্তমান | ০৪ নভেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত ও সংবাদদাতা, বনগাঁ: দশম শ্রেণির ছাত্রীকে হাত-পা বেঁধে অন্ধকারে নির্জন জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল গাইঘাটায়। নির্যাতিতার পরিবারের দাবি, ওই নৃশংস ঘটনার পর মানসিক অবসাদে আত্মহত্যার চেষ্টা করে কিশোরী। পরিবারের এক সদস্যা তাঁকে কোনওক্রমে বাঁচান। এরপরই গাইঘাটা থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। তদন্তে নেমে স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রীর ভাইপোকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। নাম সুজিত পাল (৩০)। রবিবার তাকে বনগাঁ আদালতে তোলা হলে চারদিনের পুলিসি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

    পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, টিউশন যাওয়ার জন্য গত শুক্রবার সন্ধ্যায়  বাড়ি থেকে বেরয় দশম শ্রেণির ওই ছাত্রী। অভিযোগ, রাস্তায় তাকে একা পেয়ে পড়শি যুবক সুজিত ওরফে বাবুসোনা ওড়না দিয়ে হাত-পা বেঁধে নির্জন জঙ্গলে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। এখানেই শেষ নয়। বিষয়টি জানাজানি হলে নির্যাতিতাকে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ঘটনার পরদিন বিকালে নিজের ঘরেই গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে নির্যাতিতা। পরিবারের এক সদস্যা তাকে প্রাণে বাঁচায়।

    জানা গিয়েছে, ধৃত সুজিত এলাকায় তৃণমূল কর্মী হিসেবে পরিচিত। তার পিসি স্থানীয় শিমুলপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রাক্তন উপ প্রধান। বিগত দেড় বছর ধরে সুজিত ওই কিশোরীকে বিভিন্ন ভাবে উত্যক্ত করত। বিষয়টি নিয়ে কয়েকমাস আগে এলাকায় একটি সালিশি সভা হয়। সেখানে নিজের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছিল সুজিত। কিন্তু সেটা যে স্রেফ কথার কথা ছিল, শুক্রবার রাতের ঘটনাই তার প্রমাণ। নির্যাতিতার বাবা বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর অভিযুক্তের বাড়িতে গিয়েছিলাম। কিন্তু টাকা নিয়ে মিটমাট করিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। তাতে রাজি না হওয়ায় আসে খুনের হুমকি। এর আগেও এই ঘটনা ঘটিয়েছে সুজিত। আমাদের হুমকি দিয়ে বলত, তার পিসি তৃণমূলের নেত্রী। বাবা প্রাক্তন সেনাকর্মী ও কাকা রাজ্য পুলিসে কর্মরত। তাই কেউ কিছু করতে পারবে না। আমরা গরিব মানুষ। কিছু বলার ক্ষমতা ছিল না। ওর কঠোর শাস্তি চাই।’

    এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই রাজনৈতিক ফায়দা নিতে মরিয়া পদ্ম শিবির। শনিবার নির্যাতিতার বাড়িতে যান গাইঘাটার বিজেপি বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর। রবিবার ঠাকুরনগরে মিছিলও করে বিজেপি। সুব্রত বলেন, ‘নিন্দাজনক ঘটনা। যত দ্রুত সম্ভব তদন্ত করে দোষীর চরম শাস্তির দাবি জানাচ্ছি’। যদিও বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ বিশ্বাস বলেন, ‘ধর্ষকের পরিচয় সে ধর্ষক। অন্যায় করলে কাউকে রেয়াত করা হবে না। অভিযোগ পেয়েই কোনও রং না দেখে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। আমরা নির্যাতিতার পরিবারের পাশে রয়েছি।’
  • Link to this news (বর্তমান)