সংবাদদাতা, উলুবেড়িয়া: দীপাবলির রাতে উলুবেড়িয়ায় বাড়িতে বাজি ফাটাতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছিল তিন শিশুর। সেই ঘটনার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ফের উলুবেড়িয়াতে তীব্র বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল একটি বাড়ি। পুলিস সূত্রে খবর, বাড়িতে বিপুল পরিমাণে বাজি মজুত ছিল। সেই বাজি থেকেই বিস্ফোরণ। তবে হতাহতের কোনও খবর মেলেনি। বাড়ির মালিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস।
গত শুক্রবার উলুবেড়িয়ার গঙ্গারামপুরে বাজির বলি হয় ৩ শিশু। এবার কেঁপে উঠল তাঁতিবেড়িয়া। শনিবার রাত প্রায় ১টা নাগাদ উলুবেড়িয়া পুরসভা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। তীব্র বিস্ফোরণে বাড়িটির ব্যাপক ক্ষতি হয়। ফাটল ধরে কংক্রিটের দেওয়ালে, ফেটে যায় জানালার কাচ, বেঁকে যায় লোহার গ্রিল। এছাড়া আশপাশের ৩টি বাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পুলিস জানিয়েছে, ওই বাড়িতে বিপুল পরিমাণ বাজি বেআইনিভাবে মজুত করে রাখা ছিল। তার ফলেই বিস্ফোরণ ঘটে। মাঝরাতে ভয়াবহ শব্দে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। তাঁদেরও সন্দেহ, বাড়িতে মজুত রাখা বাজি ফেটে এই দুর্ঘটনা। রাতেই উলুবেড়িয়া থানার পুলিস বাড়ির মালিক শ্যামল মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করেছে। ধৃতের বিরুদ্ধে পুলিস ভারতীয় ন্যায় সংহিতা ও ওয়েস্ট বেঙ্গল ফায়ার সার্ভিস আইনের ধারায় মামলা রুজু করেছে। ধৃতকে আজ, সোমবার উলুবেড়িয়া আদালতে তোলা হবে।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত শ্যামল পেশায় ইলেকট্রনিক মেকানিক। সূত্রের খবর, ওই বাড়ির দোতলার ঘরে বাথরুমের উপরের স্টোরেজে সম্ভবত বাজি মজুত করা ছিল। শনিবার রাতে সেখানেই বিস্ফোরণ হয়। মুহূর্তে গোটা এলাকা কেঁপে ওঠে। দেওয়ালে ফাটল, জানলার কাচ ভাঙার পাশাপাশি দেখা যায়, বিস্ফোরণের তীব্রতায় ঘরের দরজার কাঠের ফ্রেম খুলে বেরিয়ে এসেছে। রাতেই এলাকায় পৌঁছয় পুলিস। বাড়ির মালিক শ্যামল মণ্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে নিয়ে যায়। পরে রবিবার তাকে গ্রেপ্তার করে।
এদিন সকালে দেখা যায়, বাড়ির পাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে কাচের টুকরো। শ্যামলের দাদা অমলেন্দু মণ্ডল জানান, ‘প্রতি বছর পুজোর সময় সে বাড়িতে বাজি বানায়। এবারও বাজি বানিয়েছিল। আমরা সেই বাজি পুড়িয়েছি। কিন্তু কীভাবে বিস্ফোরণ হল বুঝতে পারছি না।’ প্রতিবেশী সুব্রত মণ্ডল জানান, ‘শনিবার রাত ১টা নাগাদ একটি বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। আমরা দৌড়ে বেরিয়ে বুঝতে পারি শ্যামলের বাড়িতে বিস্ফোরণ হয়েছে।’ কী ধরনের বাজি তৈরি করত শ্যামল? স্থানীয় সূত্রে দাবি, ‘এবারে উড়ন তুবড়ি ও শেল তৈরি করছিল সে।’ তবে বাড়িতে বাজি মজুত ছিল কি না, সেই প্রশ্নের উত্তর তিনি এড়িয়ে গিয়েছেন। ঘটনার তদন্ত করছে পুলিস।