কিছুটা স্বস্তি পেলেও আবারো কিছুক্ষণ পর শুরু হয় এই অস্বাভাবিক কাশি। ফলে অক্সিজেন পর্যন্ত দিতে হচ্ছে আক্রান্ত শিশুদের। মূলত শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা দেখা দেয় এই রোগে। আর এই ভাইরাসঘটিত রোগের সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে। এই মুহুর্তে পূর্ব-পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম জেলায় 'RSV' বা রেসপিরেটরি সিনসিশিয়াল ভাইরাস প্রকোপ লক্ষ্য করা গেছে বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। বিভিন্ন জায়গায় প্রাথমিক চিকিৎসা করার পর সুস্থতা না হওয়ার ফলে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হচ্ছে।
গত কয়েকদিনে ৫০-এর বেশি শিশু দেখা মিলেছে পূর্ব মেদিনীপুরে। তবে এই মুহুর্তে ১০ টি বাচ্চা চিকিৎসাধীন রয়েছে কোলাঘাটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে, ভর্তি রয়েছে তমলুক জেলা হাসপাতালেও। বিশিষ্ট শিশু চিকিৎসক ডাক্তার প্রবীর ভৌমিক জানান, "এই সময়ে আবহাওয়া পরিবর্তন হচ্ছে, এই সময় এই ভাইরাস ঘটিত সমস্যা দেখা দিচ্ছে। সারা রাজ্যে এর প্রকোপ বাড়ছে। তবে এবছর এই RSV প্রকোপ সবথেকে বেশী।" তিনি আরো বলেন, "সারা মাসে প্রায় ৫০ RSV আক্রান্ত শিশু ভর্তি হয়েছিলো, ৪০ জন চিকিৎসায় ছেড়ে উঠলেও আরও ১০ জন চিকিৎসাধীনে রয়েছে। কয়েকজন খুব খারাপ অবস্থায়ও আছে। ওই শিশুদের জন্য ভেন্টিলেশনে এর ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। শিশুরা এই রোগ বাড়ির বড়দের কাছ থেকে পাচ্ছে। এটা নিউমোনিয়া রোগ নয়। এটা হলো শিশুদের ক্ষুদ্র শ্বাসনালীর প্রদাহ। তাই শ্বাস ও প্রশ্বাস নিতে খুব কষ্ট হয় সহজেই।"
তিনি আরো জানান, 'PCR'-এর মাধ্যমে এই রোগ শিশুর কফ থেকে টেস্ট করে ধরা যায়। অনেক বাচ্চাদের এটা অনেক দিন ধরে আক্রমন হওয়ায় ফুসফুসে ক্ষতি করে। ঠিক সময়ে চিকিৎসা না করলে জীবনহানির ভয় থাকে। তবে সঠিক সময়ে চিকিৎসা পেলে ভয়ের কোনো কারণ নেই। বাড়িতে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া চিকিৎসা না করলে বিপদ হতে পারে।
নেবুলাইজারের ব্যবহার করতে হবে। অক্সিজেন মাত্রা ও লক্ষ্য রাখা ও পুষ্টির দিকে নজর রাখতে হবে। বেশি কান্না কাটি করলে শ্বাস ও প্রশ্বাস এর গতি আরও বেড়ে যাবে। সেদিকে সঠিক নজর দিতে হবে। অনেক সময় এক্সরে করে দেখে নেওয়া ভালো। বাড়ির লোক জন করোনা কালে যেভাবে হাত ধোয়া ও মাস্ক পড়া, বাইরে থেকে এসে ভালো করে হ্যান্ড ওয়াশ ও সর্দি কাশি হলে নিজেকে ছোট শিশুদের থেকে মাস্ক পড়া দূরে সরিয়ে রাখা বিশেষ প্রয়োজন। এই ভাইরাস এর কোনো ভ্যাকসিন নেই ও ঔষধ ও নেই। তাই অতিরিক্ত সতর্কতা দরকার বলে জানান কোলাঘাটের বিশিষ্ট শিশু চিকিৎসক ডাক্তার প্রবীর ভৌমিক।