গঙ্গা কি গিলে নেবে কলকাতাকে? ঘাট ঘুরে, দেখে শুনে বড় কথা জানালেন মেয়র
হিন্দুস্তান টাইমস | ০৫ নভেম্বর ২০২৪
গঙ্গার জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছিল কলকাতার নিমতলা ঘাটের একাংশ। সেই ছবি দেখে বুকে কাঁপন ধরেছিল অনেকেরই। খোদ মেয়র ফিরহাদ হাকিম এনিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। তবে এবার তিনি সেই ভাঙন কতটা ভয়াবহ তা খতিয়ে দেখতে পরিদর্শনে বের হলেন।
সোমবার মেয়র গঙ্গার ঘাটগুলি পরিদর্শন করেন। আদি গঙ্গার সংস্কার নিয়েও তিনি আলোচনা করেন। এদিকে এর আগে মেয়র জানিয়েছিলেন হাওড়ার দিকে পলি পড়ে যাচ্ছে। আর কলকাতা বিপন্ন হতে পারে।
ফিরহাদ বলেন, হাওড়ার অনেকটা জায়গায় পলি পড়ে যাচ্ছে। মিলেনিয়াম পার্কের জায়গায় ভাঙন হচ্ছে। নিমতলা ঘাটের কাছে ভেঙে যাচ্ছে। কলকাতার অনেকটা অংশ বিপন্ন হয়ে যাবে। জানিয়েছিলেন মেয়র।
মেয়র জানিয়েছেন, মানুষকে সচেতন হতেই হবে। আগের সরকার প্ল্যানিং না করায় গঙ্গায় ময়লা ফেলা হত। কেন্দ্রীয় সরকারকেও এগিয়ে আসতে হবে। দিল্লিতে এমন জায়গা আছে যেখানে ওয়াটার মাফিয়া আছে। জল পাওয়া যায় না। সেখানে বাংলায় গঙ্গা আছে। ১০০ বছর বাদেও যাতে এখানে জলকষ্ট না হয় সেটা এখন থেকেই দেখতে হবে। কিছু জায়গায় ড্রেজিংয়ের সমস্যা রয়েছে। যার জেরে নিমতলা থেকে ফলতলা ঘাট ভাঙছে। পোর্ট ট্রাস্ট সেন্ট্রালকে দেখতে হবে। ফরাক্কাতেও দরকার ড্রেজিং। তবে গঙ্গা পোর্ট ট্রাস্টের। ওদের জানিয়েছি। পোর্ট ট্রাস্ট পুরসভা বসে একসঙ্গে পরিকল্পনা করব। আদি গঙ্গার পলি সরাতে প্রায় ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে।
তবে এবার মূলত ড্রেজিংয়ের সমস্যার কথা উল্লেখ করেন ফিরহাদ হাকিম। মূলত তার জেরে নিমতলা ঘাটের একাংশ ভাঙছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিরে এর আগে কেন্দ্রীয় গঙ্গা কমিশনের বৈঠকেও আদি গঙ্গার সংস্কারের প্রসঙ্গ উঠেছিল বলে খবর। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই আদি গঙ্গার সংস্কারের ব্যাপারে ইতিবাচক বক্তব্য রেখেছিলেন। ৬৫৩ কোটি টাকায় এই আদিগঙ্গা সংস্কার করা হবে বলে পুরসভা সূত্রে খবর। এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে। কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থ সহায়তায় নদীর জলকে পরিষ্কার করা, নাব্যতা বৃদ্ধি করা, জোয়ারের সময় বান নিয়ন্ত্রণের সুব্যবস্থা করার মতো বড় পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে আদি গঙ্গাকে কেন্দ্র করে। উল্লেখ করা হয়েছিল প্রতিবেদনে।
নমামি গঙ্গে প্রকল্পের আওতায় ন্য়াশানাল মিশন ফর ক্লিন গঙ্গা প্রকল্পের আওতায় এই বিপুল অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে বলে খবর। আড়াই বছরের মধ্যে এই কাজ শেষ করার টার্গেট নেওয়া হয়েছিল সেই সময়।
নিঃসন্দেহে বড় প্রকল্প। বদলে যেতে পারে আদি গঙ্গার চালচিত্র। এদিকে জোয়ারের সময় কালীঘাটের নীচু এলাকায় আদি গঙ্গার জল ঢুকে যায়। সমস্যা মেটানোর জন্য নানা সময় কিছু কাজ হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় বিরাট কর্মযজ্ঞ করা হবে বলে খবর। ২৩.৬ কিমি এলাকাজুড়ে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কাজ করা হবে। তিনটি প্ল্যান্টও তৈরি করা হবে। সাতটি পাম্পিং স্টেশন, ৫টি মিনি পাম্পিং স্টেশন তৈরি হবে। ১১টি পাম্পিং স্টেশনের সংস্কার করা হবে বলেও খবর।
আইআইটি রুরকি, বেঙ্গল স্টেট ম্যানেজমেন্ট গ্রুপের মাধ্যমে কলকাতা পুরসভা ডিপিআর তৈরি করেছে। তার প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৩৪.৭ কোটি টাকা। এদিকে এর আগে পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত এনিয়ে মামলা করেছিলেন। তার জেরে ন্যাশানাল গ্রিন ট্রাইবুনালের তরফে এনিয়ে নির্দেশ জারি করা হয়। তার ভিত্তিতে নমামি গঙ্গে প্রকল্পের আওতায় আদি গঙ্গার সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।