• পুজোর ছুটির পর লাইব্রেরি খুলতেই  চক্ষু চড়কগাছ, উধাও ৩ হাজার বই
    বর্তমান | ০৫ নভেম্বর ২০২৪
  • সৌম্যকান্তি ত্রিপাঠী, বেলদা: সোনা-রুপো নয়। এবার বই চুরির তদন্তে নামল পুলিস। পুজোর ছুটিতে টানা কয়েকদিন বন্ধ ছিল লাইব্রেরি। দীর্ঘ দিন পর শনিবার লাইব্রেরি খোলে। স্বাভাবিকভাবেই অর্ধেক পড়া গল্পের বইটা শেষ করার অপেক্ষায় ছিলেন অনেক বইপ্রেমীই। কিন্তু ছুটির পর লাইব্রেরি খুলতেই চক্ষু চড়কগাছ লাইব্রেরিয়ানের। ভিতরে বুক সেলফ, চেয়ার, টেবিল, দামী কম্পিউটারে কেউ হাতও লাগায়নি। অথচ নেই একটিও বই। বেলদা থানার জাহালদা সাধারণ লাইব্রেরির এই কাণ্ড দেখে রীতিমতো অবাক এলাকার বাসিন্দারা। অনেকেরই ধারণা, মোবাইল আসার পর পাঠক কমেছে বইয়ের। গল্প সহ বিভিন্ন ধরনের বই পড়ার আগ্রহ নাকি কমেছে। তাই যদি হয় তাহলে দামী জিনিস ছেড়ে বই ছুরি কেন? এই নিয়েই জোর চর্চা শুরু হয়েছে। অভিযোগ দায়ের হতেই তদন্তে নেমে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে বেলদা থানার পুলিস। উদ্ধার হয়েছে বেশকিছু বই। ধৃতকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে তদন্তে নেমেছে পুলিস। ‘বইপ্রেম’ থেকেই এই চুরি কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিস। বিষয়টি সোস্যাল মিডিয়ায় ছড়াতেই শুরু হয়েছে জোর চর্চা। চোরের এমন অদ্ভুত কীর্তিতে অবাক নেটিজেনরাও। 

    লাইব্রেরির ভারপ্রাপ্ত লাইব্রেরিয়ান বিপ্লব মণ্ডল বলেন, পুজো ছুটির পরে লাইব্রেরির দরজা খুলে দেখি, ভিতরের বুক সেলফ ও আলমারিতে সাজানো একটিও বই নেই। প্রায় আড়াই থেকে তিন হাজার বই নিয়ে গিয়েছে চোরেরা। লাইব্রেরির জন্মলগ্ন থেকে থাকা একাধিক দুষ্প্রাপ্য বইও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। থানায় বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছি। এমন ঘটনা এর আগে কখনও শুনিনি। 

    লাইব্রেরির পাঠক মিঠুন বেরা, সন্দীপ জানা বলেন, প্রায়ই লাইব্রেরিতে এসে বই নিয়ে যেতাম। পুজোর ছুটি পড়ায় আসা-যাওয়া বন্ধ ছিল। সোমবার এসে দেখি এই ঘটনা। বাড়িতে চুরি হয় শুনেছি, কিন্তু এভাবে লাইব্রেরির বই চুরি হবে তা ভাবা যায় না। সত্যিই অবাক কাণ্ড। চোর দামী কম্পিউটার বা অন্য কিছু না চুরি করে শুধু বই চুরি করে নিয়ে গিয়েছে। মাঝেমধ্যে লাইব্রেরি থেকে এক-দুইটি বই চুরির কথা শুনেছেন অনেকেই। কিন্তু একেবারে পুরো লাইব্রেরি সাফ করার ঘটনা জেলায় এর আগে ঘটেছে কি না মনে করতে পারছেন না অনেকেই।

    ঘটনায় বেলদা থানায় অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর তদন্তে নেমে জাহালদা এলাকা থেকে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। ধৃতের নাম আবদুল আদুত আলি শাহ। ধৃতকে সোমবার দাঁতন আদালতে পেশ করে তদন্তের স্বার্থে তিনদিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে নেয় পুলিস। ধৃতের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে বেশ কয়েক বস্তা খোয়া যাওয়া বই। বাকি জড়িতদের সন্ধানে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
  • Link to this news (বর্তমান)