সংবাদদাতা, বিষ্ণুপুর: পিসির বাড়িতে বেড়াতে আসা ছাত্রীকে পছন্দ হওয়ায় প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিল নবম শ্রেণির ছাত্রীটি। তাই তাকে ‘শিক্ষা’ দেওয়ার জন্য শনিবার রাতে জয়পুরের জঙ্গলে টেনে নিয়ে গিয়ে অভিযুক্ত ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। পুলিস অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত যুবককে গ্রেপ্তার করেছে। ধৃতের নাম সুমন লোহার। তার বাড়ি জয়পুর থানা এলাকায়। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, পিসির বাড়ি বেড়াতে আসা এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। রবিবার সন্ধ্যায় এনিয়ে অভিযোগ দায়ের হয়। ওইদিনই রাতে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। সোমবার বিষ্ণুপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক ধৃতকে দু’দিনের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। সোমবার বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য জেলা হাসপাতালে ছাত্রীর মেডিক্যাল টেস্ট করা হয়।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নবম শ্রেণির এক ছাত্রী কালীপুজো উপলক্ষ্যে জয়পুর থানা এলাকায় পিসির বাড়ি গিয়েছিল। সঙ্গে তার মা ছিলেন। পিসির বাড়ির এলাকার এক যুবক সুমন লোহারের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। সুমন জমি কেনাবেচার কাজ করে। সুমন তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু, ছাত্রীটি রাজি হয়নি। শনিবার রাতে ছাত্রীটি শৌচকর্মের জন্য বাড়ির বাইরে বেরলে অভিযুক্ত তাকে জোর করে পাশের জঙ্গলে টেনে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। জঙ্গলে নিয়ে যাওয়ার সময় ছাত্রীটি চিৎকার করে। কিন্তু কালীপুজো উপলক্ষ্যে গ্রামে মাইক বাজায় তার চিৎকার কেউ শুনতে পাননি। দীর্ঘক্ষণ পরেও বাড়ি না ফেরায় তার মা ও পিসিরবাড়ির লোকজন আশপাশের বাড়িতে খোঁজাখুঁজি করেন। কিন্তু কোথাও পাওয়া যায়নি। ফলে পরিবারের লোকজনের মধ্যে উদ্বেগ বাড়তে থাকে। বিষয়টি জানাজানি হতেই এলাকার লোকজনও ছাত্রীটির সন্ধান করতে থাকেন। কয়েকজন গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলের দিকে খোঁজ করতে যায়। জঙ্গলের কাছে টর্চের আলো ও লোকজনের কথাবার্তা কানে আসতেই বিপদ বুঝে যুবকটি পালিয়ে যায়।
এলাকার লোকজন জঙ্গল লাগোয় এলাকায় পৌঁছে যাওয়ায় ছাত্রীটি চিৎকার করতে থাকে। সঙ্গে সঙ্গে পরিবার ও এলাকার লোকজন সেখানে ছুটে গিয়ে তাকে উদ্ধার করেন। ছাত্রীটিকে পিসির বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সে পরিবারের লোকজনকে গোটা ঘটনার কথা জানায়। সে অভিযুক্তেরও নাম জানায়। রবিবার সন্ধ্যায় পরিবারের তরফে জয়পুর থানায় ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করা হয়। রাতেই পুলিস অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চাপানউতোর শুরু হয়েছে। বিজেপির সাংগঠনিক জেলার মুখপাত্র দেবপ্রিয় বিশ্বাস বলেন, এই সরকারের আমলে গোটা রাজ্যে নারীদের নিরাপত্তা নেই। তাই একের পর এক খুন ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটেই চলেছে। রাজ্য সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ।
এ প্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের বিষ্ণপুর সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি দিব্যেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এই ধরনের ঘটনা না ঘটাই কাম্য। কিন্তু ঘটনা ঘটলে আমাদের রাজ্যের পুলিস সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেয়। জয়পুরের ঘটনাতেও মূল অভিযুক্তকে পুলিস তৎপরতার সঙ্গে গ্রেপ্তার করেছে। কিন্তু বিজেপি শাসিত রাজ্যে পুলিস দোষীদের ফুলের মালা পরিয়ে সংবর্ধনা দেয়।