সংবাদদাতা, তেহট্ট: শীতপ্রধান দেশের এক ঝাঁক কালো বক দেখা গেল তেহট্ট থানার বিভিন্ন জলাশয়ে। এই পরিযায়ী পাখির আগমনে খুশি পরিবেশপ্রেমী থেকে পাখিপ্রেমীরা। তবে পাখি শিকারীদের সতর্ক করতে বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই বনদপ্তরের আধিকারিকরা মাইকিং করে প্রচার চালাচ্ছেন। প্রত্যেক বছরই এই সময়ে বিভিন্ন ধরনের পরিযায়ী পাখি এখানে আসে। কিন্তু এই কালো কুচকুচে বকগুলিকে আগে কখনও দেখা যায়নি। গ্রামবাসীরা জানান, এই রঙের বক তাঁরা কোনওদিন দেখেননি। এই কালো বকগুলিকে যাতে কেউ বিরক্ত না করেন, সেদিকে তাঁরা লক্ষ্য রাখবেন। পক্ষী বিশেষজ্ঞদের কথায়, এই পাখির বৈজ্ঞানিক নাম ইক্সোব্রাইকাস ফ্লেভিকোলিস। যাকে কেউ বলেন কালিবক, কালা বগলা, কালো বক বা চর খুচি। এটা ইক্সোব্রাইকাস শ্রেণিভুক্ত কালচে রঙের ছোট জলচর পাখি। এই পাখিটি ভারত, বাংলাদেশ, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া ও ওশিয়ানিয়ায় দেখতে পাওয়া যায়। সাধারণত এরা শীতপ্রধান এলাকায় থাকতে পছন্দ করে। আশঙ্কার কথা বিগত কয়েক দশক ধরে এঁদের সংখ্যা ক্রমশ কমছে। এরা সাধারণত ৫৮ সেন্টিমিটার উঁচু হয়। ওজন হয় ৩০০ থেকে ৪২০ গ্রাম। মাথার তালু স্লেট রঙের চকচকে হয়, যা ঘাড় গলা হয়ে সারা পিঠে দেখা যায়। এরা সাধারণত মাছ, ব্যাঙ, ছোট জলে থাকা সাপ পোকা মাকড় খেয়ে বেঁচে থাকে। ভোরবেলা আর সন্ধ্যায় শিকার করতে বের হয়। এই পাখি নিচুগাছ বা ঝোপঝাড়ে বাসা করে। এক সঙ্গে এরা চারটে ডিম পাড়ে। সেই ডিম থেকে ১৮ থেকে ২২ দিনে বাচ্চা ফোটে। তেহট্ট মহকুমা বন বিভাগের আধিকারিক সুদিন দাস জানান, কালো বকগুলি এর আগে খুব একটা দেখা যায়নি। নির্দিষ্ট সময়ে ডিম ফুটিয়ে বাচ্চা হওয়ার পর উড়তে শিখলে বাচ্চাগুলি নিয়ে এরা যথাস্থানে ফিরে যায়। শিকারীদের হাত থেকে এদের বাঁচাতে রাত পাহারার পাশাপাশি মাইকিং করে প্রচার চালানো হচ্ছে।